যশোর সদর উপজেলার পতেঙ্গালীর একটি বাড়ি থেকে সানজিদা নামের চার বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। পতেঙ্গালীর এই বাড়ির চালের ড্রামের ভেতর থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। উক্ত ঘটনায় ওই বাড়ির মালিক আঞ্জুয়ারা বেগমকে আটক করেছে যশোর ডিবি পুলিশ। মৃত উদ্ধার হওয়া সানজিদা একই গ্রামের সোহেল হোসেনের মেয়ে।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না সানজিদাকে। এ নিয়ে সানজিদার পরিবার কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে বিষয়টির তদন্ত ভার দেওয়া হয় যশোর ডিবি পুলিশকে।
সানজিদার পরিবারের সন্দেহের তীর ছিল একই গ্রামের প্রতিবেশী আঞ্জুয়ারার বিরুদ্ধে। বিষয়টি আমলে নিয়ে আঞ্জুয়ারাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ঘরের চালের ড্রামের মধ্যে লাশ আছে বলে স্বীকার করেন আঞ্জুয়ারা।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বিবাদী আঞ্জুয়ারা খাতুন স্বেচ্ছায় স্বীকার করে যে, নিখোঁজ সানজিদাকে আপেল খাওয়ার প্রলোভন দিয়ে তার বিল্ডিং ঘরে ডেকে নিয়ে তার বসতঘরের পূর্ব পার্শ্বের কক্ষে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পূর্ব আক্রোশে তার নিজের ব্রা ও গামছা দ্বারা হাত-পা বেঁধে ওড়না দ্বারা গলায় ফাঁস দিয়ে এবং মুখের মধ্যে ওড়না ঢুকিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
হত্যার রহস্য গোপন করার জন্য মরদেহ তার ঘরের সিড়িপথের নীচে রাখা চালের ড্রামের মধ্যে চাল দিয়ে ঢেকে রাখে।
এছাড়াও আঞ্জুয়ারা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সানজিদার পরিবারের লোকজনদেরকে বাড়ীর পাশে পুকুরে তল্লাশী করার পরামর্শ দেয় এবং বিভিন্ন জায়গায় তাদের সাথেই খোজাখুজি করে।
তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ডিবি ও থানা পুলিশ তাকে নিয়ে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিসহ জনতার সামনে কোতয়ালী মডেল থানাধীন বি-পতেঙ্গালী আঞ্জুয়ারা খাতুন এর পাকা বসত বাড়ীর সিড়িপথের নীচে রাখা টিনের তৈরী চালের ড্রামের মধ্যে চালের নীচ থেকে আঞ্জুয়ারা খাতুনের দেখানো ও নিজ হাতে বাহির করে দেওয়া মতে নিখোঁজ সানজিদা জান্নাত মিষ্টির মৃতদেহ উদ্ধার করে ডিবি ও থানা পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী আঞ্জুয়ারা খাতুন জানায় যে, আঞ্জুয়ারা খাতুন ও তার কথিত স্বামী রেজাউল রেজা’র বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ডের বিষয়ে (সানজিদার মা) শরিফা খাতুন অবগত থাকায় এবং বিভিন্ন সময়ে তার বাকশক্তিহীন প্রতিবন্ধি ছেলে অপূর্ব হাসান (৭) এর সাথে ভিকটিম সানজিদা জান্নাত মিষ্টির হাতাহাতি করার সময় ছেলেকে পাগল বলে গালি দেওয়ায় বিবাদী আঞ্জুয়ারা খাতুন তার স্বামী রেজাউল রেজাসহ অজ্ঞাত ব্যক্তির পরামর্শে আপেল খাওয়ার প্রলোভন দিয়ে তার বিল্ডিং ঘরে ডেকে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পূর্ব আক্রোসে নিখোঁজ সানজিদা জান্নাত মিষ্টি (৪) শিশু বাচ্চাকে বিবাদী তার নিজের ব্রা ও গামছা দ্বারা হাত-পা বেঁধে ওড়না দ্বারা গলায় ফাঁস দিয়ে এবং মুখের মধ্যে ওড়না ঢুকিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে হত্যার রহস্য গোপন করার জন্য মরদেহ তার বসত ঘরের সিড়িপথের নীচে রাখা চালের ড্রামের মধ্যে রেখে চাল দিয়ে ঢেকে রাখে।
মর্নিংনিউজ/আই/শাশি
