শিগগিরই খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান!

ফাইল ছবি

প্রায় দুই মাস ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। দীর্ঘ এই ছুটিতে শিক্ষার্থীদের পাঠকার্যক্রমের পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে সব ধরনের পরীক্ষা। করোনার কারণে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থগিত। স্কুলপর্যায়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষাও অনিশ্চিত। বেসরকারি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অর্থসঙ্কটে বন্ধের উপক্রম। এ অবস্থায় সবার মনে প্রশ্ন কবে খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

এদিকে সরকারের নির্দেশে ইতোমধ্যে সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে সরকারি অনেক অফিস। পোশাক কারখানা তো আগে থেকেই খোলা। পাড়া মহল্লার কাঁচাবাজার ও দোকানপাটও চলছে যথারীতি। চলতি সপ্তাহ থেকে ব্যস্ততা বাড়বে ব্যাংক পাড়ায়ও। মার্কেট এবং শপিংমলও খুলছে। শিগগিরই রাস্তায় চালু হবে গণপরিবহন। খুলে দেয়া হয়েছে মসজিদ। বর্তমানে খুলে দেয়ার এই অবস্থা বজায় থাকলে রোজা এবং ঈদের পরেই স্বাভাবিক হবে সবকিছু। মানুষের জীবনযাত্রাতেও স্বাভাবিক গতি ফিরে আসবে। তাই অভিভাবকদের অনেকেই মনে করছে সবকিছু যখন খুলে দেয়া হচ্ছে তাহলে হয়তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেয়া হতে পারে। তাদের ধারণা ঈদের পরপরই হয়তো খুলে দেয়া হতে পারে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।

সচেতন অভিভাবকদের অনেকে বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া যদি অন্য সবকিছু খুলে দেয়া হয়, তা হলে দেখা যাবে শিক্ষার্থী ঘরে থাকলেও তার বাবা কাজের জন্য বাইরে যাচ্ছেন। মা হয়তো তার প্রয়োজনেই নির্দ্বিধায় বাজার কিংবা মার্কেটে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাবা-মা যদি সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে স্বাভাবিকভাবে বাইরে চলাফেরা করতে থাকে, তাহলে যে উদ্দেশ্যে স্কুল কলেজ বন্ধ, শিক্ষার্থীদের সেই নিরাপত্তাই বা কতটুকু প্রতিপালন হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ জারি করা ছুটির নোটিশে দেখা গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বর্ধিত করে ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। আবার শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী আগামী জুন মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছু্টি দেখানো আছে। অর্থাৎ নতুন করে যদি এই ছুটির মেয়াদ বাড়ানো না হয় তাহলে ঈদের পরেই খুলে দেয়া হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) জারি করা সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনে দেখা গেছে করোনা ভাইরাসজনিত চলমান পরিস্থিতির কারণে স্কুল-কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি চতুর্থবারের মতো বাড়ানো হয়েছে। সেখানে পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরসহ নতুন করে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো: গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে ৩০ মে পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা যাতে নিয়মিতভাবে সংসদ টিভি এবং ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ অনুষ্ঠানের পাঠগুলো গ্রহণ করে- সেই নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। একই সাথে কলেজ পর্যায়ে অধ্যক্ষরা যাতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পারে সেই তাগিদ দেয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো: মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন, কবে নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে তা এখনি স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। সবকিছু নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির উপর। তবে তিনি এটাও উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি এক বক্তব্যে ঘোষণা দিয়েছেন- করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে একথা ঠিক যে, করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে এই ছুটি কমিয়ে আনতে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না। তখন হয়তো খুব শিগগিরই খুলে দেয়া হবে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *