মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বন্দোরখোলা ইউনিয়নের নুরুদ্দিন মাদবরেরকান্দি এস ই এস ডি পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি অবশেষে পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বিকেল ৪ টার দিকে বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হয়।
চরাঞ্চলের একটি দৃষ্টিনন্দন তিন তলা বিশিষ্ট ভবন ছিল ওই স্কুলটি। স্কুলটি স্থাপিত হয় ২০০৯ সালে।
স্থানীয়রা জানান , শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের নূরুদ্দিন মাদবরেরকান্দি গ্রামে অবস্থিত এস ই এস ডি পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ তলা ভবনটি বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে তলিয়ে যেতে থাকে পদ্মায়।
বন্দোরখোলা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে স্থাপিত এই বিদ্যালয়টির কারণে শিবচর উপজেলার বন্দোরখোলা ইউনিয়নের প্রায় ২৪ টি গ্রাম ও ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের ছেলে-মেয়েরা এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতো। বিদ্যালয়টি ছিল চরাঞ্চলের একমাত্র দৃষ্টিনন্দন তিনতলা ভবনসহ আধুনিক সুবিধা সমৃদ্ধ একটি উচ্চ বিদ্যালয় ।
বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় , চরের এই বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের সকলেই চরের বাসিন্দা। মূল ভূ-খন্ড এখান থেকে বেশ দূরে হওয়ায় চরের ছেলে-মেয়েরা অন্যত্র গিয়ে লেখাপড়া করার সুযোগ পেতো না। এই বিদ্যালয়টি হওয়ার কারণে এখন চরের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতো। চরের ছোট ছোট প্রায় ২৪ টি গ্রাম থেকে তিনশতাধিক শিক্ষার্থী ছিল বিদ্যালয়টিতে।
স্থানীয়রা আরো জানান , স্কুলটি পদ্মার নিকটবর্তী হওয়ায় প্রতি বছরই বন্যার পানিতে ডুবে যেতো বিদ্যালয়সহ আশেপাশের এলাকা। গত বছর পদ্মানদী ভাঙতে ভাঙতে পেছন দিক দিয়ে বিদ্যালয়টির নিকটে চলে আসে। এরপর গত বছরই ওই এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকিয়ে রাখে। চলতি বর্ষা মৌসুমেও ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং চলতে থাকে ওই এলাকায়। তবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রচন্ড স্রোতের কারণে জিও ব্যাগ ফেলে তেমন সুবিধা করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বুধবার রাতে তিন তলা ভবনের বিদ্যালয়টির কিছু অংশ হেলে পরে।
বন্দরখোলা ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড সদস্য মো. ইসমাইল জানান,’বুধবার রাত ১১ টার দিকে হঠাৎ করেই বিকট শব্দ হতে থাকে স্কুলের ভবনের মধ্য থেকে। খবর পেয়ে অসংখ্য মানুষ ট্রলারে করে বিদ্যালয়টি দেখতে আসে। আমাদের সামনেই বিদ্যালয়টি মাঝখান থেকে ফাটল ধরে পেছন দিকে হেলে পরে।’
তিনি আরো জানান,’বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টার দিকে বিদ্যালয়টি তলিয়ে যেতে শুরু করে।
এসময় এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙে পরে। চোখের সামনে এভাবে বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে দেখে স্থানীয়রা আবেগে আপ্লুত হয়ে পরে।’