সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করতে ব্যাংকগুলোতে আইটি অডিট শুরু

সাইবার নিরাপত্তা

সাইবার নিরাপত্তা

বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করতে আইটি বা তথ্যপ্রযুক্তি অডিট সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (সার্ট)। সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি সার্টের যৌথ উদ্যোগে এ অডিট সম্পন্ন করা হবে। দেশে প্রথমবারের মতো আইটি অডিট করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও গ্রাহকদের লেনদেনের এবং তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে আইটি অডিট করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, আইটি অডিটের আওতায় প্রথমে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর আইটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা হবে। পরে বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় অডিট সম্পন্ন করা হবে। পর্যায়ক্রমে গুরুত্ব বিবেচনায় অন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয়ও অডিট হবে। এর অংশ হিসাবে ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংকে আইটি অডিট শুরু হয়েছে। এরপর রূপালী ব্যাংকে হবে। পরে অন্য সরকারি ব্যাংকগুলোয় আইটি অডিট পরিচালিত হবে। একই সঙ্গে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথমে ব্র্যাক ব্যাংকে আইটি অডিট করা হবে। এরপর অন্য ব্যাংকগুলোয় আইটি অডিট করা হবে। সার্ট আইটি অডিটের ব্যাপারে এ কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছে।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় সার্টের প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ বলেন, সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আইটি খাতে কার কী দুর্বলতা আছে, তা শনাক্ত করা হবে। একই সঙ্গে সেগুলোর সমাধানের পরামর্শও দেওয়া হবে। সাইবার নিরাপত্তার মান অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে রেটিং করা হবে। যাতে গ্রাহকরা সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে। এর আওতায় ইতোমধ্যে আর্থিক খাত প্রায় ডিজিটাল হয়ে গেছে। গ্রাহকরা এখন অনলাইনে, এটিএম কার্ডে বা মোবাইল ফোনে অর্থ লেনদেন করছেন। এসব লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রথমে ব্যাংকগুলোয় আইটি অডিট পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোয় সাইবার হামলার ঝুঁকি কমবে।

সূত্র জানায়, ব্যাংকিং লেনদেনের সিংহভাগ এখন ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। আইটিতে দুর্বলতা থাকলে সিস্টেমস হ্যাক করে সাইবার হামলা চালিয়ে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ হতে পারে। গ্রাহকদের গোপনীয় তথ্য চুরি করে ব্ল্যাকমেইলিং করতে পারে। ইতোমধ্যে এ ধরনের কিছু ঘটনা ধরা পড়েছে। আন্তর্জাতিক হ্যাকার গ্রুপ বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্য করা বিভিন্ন ম্যালওয়্যার ভাইরাস (কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনে গোপনে অবস্থান করে গ্রাহকের গোপনীয় তথ্য হ্যাকার গ্রুপের কাছে পাঠায়) পাঠাচ্ছে। এ ধরনের বেশকিছু ভাইরাস শনাক্ত করে সেগুলোকে অপসারণ করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাইবার নিরাপত্তা বাড়াতে নিজ উদ্যোগে ঘাটতিগুলো পূরণ করছে। নতুন নতুন সফটওয়্যার সংযোজন করছে। সাইবার সিকিউরিটি ইউনিট গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলাকেও সাইবার নিরাপত্তা বাড়াতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে ব্যাংকগুলোও এখন সাইবার নিরাপত্তা বাড়াতে দক্ষ জনবল নিয়োগ ও অনলাইন সিস্টেমকে হালনাগাদ করছে। একই সঙ্গে আইটি খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *