সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশের ফের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

ছবি: সংগৃহিত

সেনাবাহিনীর স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি ওসি প্রদীপ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতসহ ৭ পুলিশের ফের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে র‌্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রদীপসহ ৭ পুলিশ সদস্যের প্রথম দফা ৭ দিন রিমান্ড শেষে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবারও ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক তামান্না ফারাহ প্রত্যেকের ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এসময় ওসি প্রদীপ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতসহ ৭ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া বাকি ৪ আসমি হলো- কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়া।

রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম।

জানা যায়, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তিন আসামি টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে গত মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে ৭ দিনের রিমান্ডের জন্য র‍্যাব-১৫ কার্যালয়ে নিয়ে যায় মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা। গত ৭ দিন র‌্যাব হেফাজতে সিনহা হত্যা নিয়ে তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলে। একপর্যায়ে শুক্রবার (২১ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই তিন আসামিকে নিয়ে ঘটনাস্থল রেকি করে র‌্যাবের একটি দল। ওখানে প্রায় তিন ঘন্টা তদন্ত কার্যক্রম ও জিজ্ঞাসাবাদ চালায় সিনহা হত্যা মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা র‌্যাবের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম।

পরদিন শনিবার (২২ আগস্ট) সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে কক্সবাজার কারাগার থেকে সিনহা হত্যা মামলার আরও তিন আসামি রিমান্ডপ্রাপ্ত কক্সবাজার-১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপপরিদর্শক শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহকে র‌্যাব-১৫ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। একই দিন শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ডিএসবি শাখায় থেকে সিনহাকে গুলি করা ইন্সপেক্টর লিয়াকতের পিস্তল ও ২টি খালি ম্যাগজিন গ্রহণ করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম।

মেজর সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম সেদিন বলেছিলেন, আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য দিচ্ছেন। তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করাও হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আদালতের আদেশ মতে ইন্সপেক্টর লিয়াকতের পিস্তল ও ২টি খালি ম্যাগজিন র‌্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি র‌্যাবের অভিজ্ঞ সদস্য দিয়ে সব আলামত পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাত ১০টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় নিহতের বোন শাহরিয়ার শারমিন ফেরদৌস বাদী হয়ে ৫ আগস্ট টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। এই মামলায় বর্তমানে ১৩ জনকে আটক করেছে র‌্যাব। পাশাপাশি প্রত্যেককে ৭ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *