ঝিনাইদহে আমা ইটের খোয়া দিয়ে ঢালাই হলো স্কুল ভবনের ছাদ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের মহামায়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে খুবই নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের মান খারাপ এবং নির্মাণ কাজেও করা হয়েছে অনিয়ম ঠিক এমনটা অভিযোগ সচেতন এলাকাবাসীর।

নিয়ম অনুযায়ী কার্যস্থলে নির্মাণ কাজের বিবরণ সম্বলিত সাইন বোর্ড দৃশ্যমান থাকার কথা থাকলেও তা টানানো হয়নি। ফলে এই কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, নিম্নমানের ইট, খোয়া ও জংধরা রড দিয়ে নির্মাণ কাজ চলছে। স্কুলের অভ্যন্তরীণ ওয়াল নির্মাণ এবং ছাদ ঢালাই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে দুই-তিন নম্বর ও নম্বরবিহীন নিম্নমানের ইট এবং ইটের খোয়া।পা দিয়ে একটু জোরে চাপ দিলেই গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে ইটগুলো।

বিষয়টি গনমাধ্যমকর্মীরা উপজেলা ইঞ্জিয়ারকে জানালে তিনি কাজ বন্ধ করে দেন। তখন বিকাল আনুমানিক ৪.২০ মিনিট। তবে গনমাধ্যমকর্মীরা ফিরে এলে ছাদ ঢালাই সম্পন্ন করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দ্বায়িত্ব থাকা আব্দুল মালেক।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা আর নীরব ভূমিকার কারনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নোংরা, নিম্নমান ও নম্বরবিহীন এসব আমা ইট ব্যবহার করে কাজ করছেন বলে অভিযোগ। নির্মাণ কাজ তদারকির জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোন কর্মকর্তা-প্রকৌশলীকে সেখানে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, সিডিউলে উন্নতমানের ইট, পাথর ও রড, সিমেন্ট দিয়ে কাজ করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অসাধু কর্মকর্তা, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির সাথে আঁতাত করে নিম্নমানের ইট, পাথর, সমদূরত্বের রড না দেয়া এবং পরিমানে কম সিমেন্ট ও অতিরিক্ত পরিমাণে বালি ব্যবহার করেছে বলে গ্রামবাসি অভিযোগ করেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা আব্দুল মালেক নিজেকে সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে বলেন সন্ধ্যায় অফিসে দেখা করেন, সেখানে কথা হবে।

মহামায়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আশরাফ রিপনের কাছে স্কুল ভবন নির্মাণ কাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজের গুনগত মান তেমন খারাপ ছিলনা। খোয়ার মান একটু খারাপ ছিল। পরে ইঞ্জিয়ারের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আহসান হাবীব জনান, ১ কোটি ৩ লাখের বরাদ্দ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান “মুগ্ধ বিল্ডার্স” কাজটি করছেন। কাজের মান ভাল, তবে প্রথমে কিছুটা অনিয়ম ছিল। তাছাড়া তেমন কোন অমিয়ম হয়নি ওখানে দুটি গ্রুপ আছে যার কারনে সমস্যা।

গণমাধ্যম কর্মীরা কাজের অনিয়মের ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশল অফিসে ফোন করলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদের ফোন পেয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম পরে মেটেরিয়ালস এর কোয়ালিটি দেখে বিভিন্ন শর্তে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *