আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ত্রাণ কার্যক্রমে অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছে।তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনগত, প্রশাসনিক ও দলীয় ব্যবস্থা গ্রহন তারই প্রমাণ। সরকার কঠোর অবস্থানে আছে বলেই সামান্য অপরাধ করলেও কেউ রেহাই পাচ্ছে না।’
গতকাল মঙ্গলবার সকালে তার সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্বের ২১২টি দেশ ও আঞ্চলে করোনার বিস্তার ঘটেছে। এর মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা ৩৪তম। প্রতিবেশী দেশ ভারত পাকিস্তানসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের অবস্থান ভালো হলেও পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতিশীল। ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে বলেই স্পষ্টত প্রতীয়মান হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ রোগ সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই কার্যকর পন্থা। এমন সংকটে আমাদের সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কোন বিকল্প নেই। অথচ আমরা লক্ষ্য করছি প্রধানমন্ত্রী সাধারণ ছুটি কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিথিল করার পর বাণিজ্যকেন্দ্র, ফেরিঘাটে, তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য কারখানা এবং সর্বত্র স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব ও শারীরিক দূরত্ব কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান উপেক্ষিত হচ্ছে।
সবাইকে সতর্ক করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না সামান্য উপেক্ষা বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনবে। তাই এখন থেকে সতর্ক থাকতে আমি আবারও সবাইকে অনুরোধ করছি। করোনার সঙ্গে বসবাসের অভ্যাস রপ্ত করতে হবে আমাদেরকে।
করোনা ভাইরাস থেকে প্রতিকারে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত জনগণকে সচেতন থাকতে এবং সংক্রমণ রোধে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি চিকিৎসাসহ সার্বিক পরিস্থিতি গভীরভাবে মনিটর করছেন। আমরাও আমাদের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে সক্ষমতা অর্জন করছি। প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করছি।
ঈদ শপিং এ মার্কেট না গিয়ে অনলাইন ভিত্তিক কেনাকাটার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, শপিংমলে যারা সরাসরি কেনাকাটা করছেন সেখানে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। প্রযুক্তির সহায়তায় অনেকে অনলাইনে শপিং করছেন। অনলাইনে কেনাকাটার বিষয়টি আজকাল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সাধারণ রোগীদের সেবার জন্য বেসরকারি ক্লিনিক ও চেম্বার খোলা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখা বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা পরিস্থিতির কারণে সীমিত হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ তথা রোগীরা অন্যান্য রোগের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এজন্য আমি স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করে প্রতিদিন কিছু সময় প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখতে চিকিৎসকদের অনুরোধ জানাচ্ছি।
সরকারের আর্থিক সহায়তা ও ত্রাণ তৎপরতার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক দশকে বাংলাদেশ যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে এ সংকট মুহূর্তে এত বিপুল পরিমাণ ত্রাণ ও প্রণোদনা প্রদান সম্ভব হচ্ছে। প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ, এক কোটি মানুষকে রেশনের আওতায় আনা, ৫০ লাখ মানুষকে নগদ সহায়তা প্রদান সমসাময়িক বিশ্বে নজিরবিহীন।