করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বাগেরহাটের রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চলছে। করোনায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় শ্রমিকেরা প্রকল্প এলাকার নির্মাণকাজে অনীহা দেখানোয় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণকাজ চলতি অর্থবছরের জুন পর্যন্ত ৪৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। এখনও ৫১ শতাংশ কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। ফলে আগামী ২০২১ সালে সরকারের বিদ্যুৎখাতের বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প শেষ করে উৎপাদনে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কমিশনিং এবং আগস্টে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেডের উপ প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, রামপালে নির্মাণাধীন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিটের কাজ পুরোদমে চলছিল। এখানে সরকারের নিয়োগ করা ১৩টি প্রাইভেট কোম্পানির প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছিল। এর মধ্যে ভারতীয় অভিজ্ঞ শ্রমিকই রয়েছে দেড় হাজারের বেশি।
গত মার্চ মাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মহামারি আকার ধারণ করার পর এই প্রকল্প এলাকার উন্নয়ন কাজে ধীরগতি শুরু হয়। স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে ভারতীয় শ্রমিকেরা গত মাসে দেশে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তারা দেশে ফিরতে তাদের নিয়োগ দেয়া কোম্পানির মালিকদের চাপ দিতে থাকলে এই প্রকল্প এলাকার উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখতে হয়। গত ২৭ ও ২৮ মে এবং ২ জুন তিন দফায় ৬০১ জন শ্রমিককে তাদের নিয়োগ করা কোম্পানি নিজস্ব খরচে বিশেষ বিমানে করে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। এখন প্রকল্প এলাকায় উন্নয়ন কাজ একেবারেই বন্ধ হয়ে আছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশীপ পাওয়ার কোম্পানী (প্রাইভেট) লিমিটেড যৌথভাবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যৌথভাবে সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সাপমারি-কাটাখালী ও কৈর্গদাশকাঠী এলাকায় ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি ইউনিট নির্মানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। ১৮৩৪ একর জমির উপর প্রায় ১২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।