দুই যুবক-যুবতীর বিয়ে হলো। বিয়ের পর নববধূ স্বামীর সাথে তার পরবর্তী ঠিকানা শ্বশুর বাড়ির পথে। পথিমধ্যেই ঘটলো দুর্ঘটনা। পথরোধ করে বসলো চার বখাটে। স্বামীকে আটকে রেখে বখাটেরা ঝাপিয়ে পড়লো নববধূর উপর।
কি ভাবছেন কোন সিনেমার গল্প বলতেছি! জি না- এটা কোন সিনেমার ক্লাইমেক্স মুহুর্তও নয় আর তাই স্বামীও নায়কের ভূমিকায় সকল অশুভ শক্তিকে এক তুড়ি মেরে তার প্রিয়তমা বউকে বাঁচাতে পারেনি। ফলে পর্যায়ক্রমে স্বামীর সামনেই ওই চার বখাটে ধর্ষণ করে নতুন বউকে।
গত ৭ জুন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ৪ নম্বর কোলাগাঁও ইউনিয়নের বড়ুয়া পাড়ায় লোমহর্ষক এই ঘটনাটি ঘটে। স্বামী-স্ত্রী উভয়ই লোকলজ্জার ভয়ে ঘটনাটি ওখানেই ধামাচাপা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দ্রুতই ছড়িয়ে যায় সেই মর্মান্তিক ঘটনার কথা। পরিশেষে ধর্ষিতা নিজে উপস্থিত হয়ে ঘটনার ৭ দিন পর রবিববার (১৪ জুন) পটিয়া থানায় চার ‘ধর্ষকের’ নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এজাহারভুক্ত ওই চার ধর্ষক হচ্ছে কোলাগাঁও ইউনিয়নের খায়ের উল্লাহ সওদাগরের বাড়ির মৃত আবুল হোসেনের ছেলে হান্নান (৩২), একই ইউনিয়নের আজিজুল হক মেম্বারের বাড়ির বাদশা মিয়ার ছেলে মন্টু (৩০), ফোরকান মাঝির ছেলে জুয়েল (২৮) এবং ছাত্তারের ছেলে মিন্টু (৩৩)।
মামলার এজাহারে ওই নববধূ জানিয়েছেন, গত ৪ জুন ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বোয়ালখালী উপজেলার আরিফের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের ৩ দিন পর গত ৭ জুন বাপের বাড়ি থেকে স্বামীকে সাথে নিয়ে বোয়ালখালী শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন তিনি। রাত পৌনে ৯ টার দিকে কোলাগাঁওয়ের উত্তর পাড়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসার সামনে পৌঁছলে হঠাৎ ৪ যুবক মিলে তাদের পথরোধ করে তাদের টেনেহিঁচড়ে চিড়িঙ্গার পুকুর পাড় নামে একটি জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে স্বামী আরিফকে আলাদা করে আটকে রেখে পালাক্রমে রাত ১২টা পর্যন্ত তাকে জোর করে ধর্ষণ করে তাদের সেখানে ফেলে রেখে চলে যায় ধর্ষকরা।
প্রথম দিকে বিষয়টি লোকলজ্জার ভয়ে গোপন রাখলেও পরবর্তীতে যখন জানাজানি হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আত্মীয়স্বজনদের পরামর্শে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানায় ভুক্তভোগী ওই নারী। অভিযুক্ত ওই ৪ জন বিয়ের আগেও বিভিন্নভাবে ভুক্তভোগীকে উত্যক্ত করতো বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বোরহান উদ্দিন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মর্নিং নিউজ বিডিকে বলেন, ‘এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। মামলার বাদীকে ফরেনসিক টেস্টের জন্য চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে এই ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই অভিযুক্ত ধর্ষকদের বিরুদ্ধে এলাকার তরুণীদের বিভিন্ন সময়ে উত্যক্ত করার বিষয় তুলে ধরে দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার দাবী করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছে।