এসএসসি-এইচএসসির চূড়ান্ত সিলেবাস প্রকাশ

এসএসসি
এসএসসি
ছবি: সংগৃহিত

২০২১ সালের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার চূড়ান্ত সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ হয়েছে। শুক্রবার ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে চূড়ান্ত সিলেবাস প্রকাশ হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর নেহাল আহমেদ।

তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক এসএসসি ও এইচএসসির সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। কবে থেকে ক্লাস শুরু হবে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেবে।

বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমানো সিলেবাস আরও সংক্ষিপ্ত করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে।

২০২১ সালের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এরপর থেকেই এ স্তরের শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে ভাটা পড়েছিল। কোন অধ্যায় রেখে কোন অধ্যায় পড়বে এমন এমন দ্বন্দ্বে ভুগছিল শিক্ষার্থীরা।

গত ২৭ জানুয়ারি এনসিটিবিতে কারিকুলাম বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানে কর্মকর্তাদের ৬০ দিন এসএসসি ও এইচএসসি ৮৪ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস করার নির্দেশ দেন।

ওই বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ৯ মে এসএসসির ও ১৫ জুন এইচএসসির সব ক্লাস শেষ করতে হবে। জুনে এসএসসি ও জুলাই বা আগস্টে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে যতটুকু সিলেবাস পড়ানো যাবে ততটুকু সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হবে। এ সংক্ষিপ্ত সিলেবাস থেকে পরীক্ষা প্রশ্ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রীর এমন নির্দেশনার পর এনসিটিবির বিশেষজ্ঞরা এসএসসি-এইচএসসির প্রত্যেকটি শ্রেণিতে দুইদিন করে ওয়ার্কশপ করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের কাজ শেষ করেন।

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি এসএসসির সিলেবাস গড়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমিয়ে শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। তখন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, তিন মাসে এ সিলেবাস শেষ করা সম্ভব নয়। এরপর মন্ত্রী সেই সিলেবাস আরও সংক্ষিপ্ত করে নিদিষ্ট ক্লাস ও দিন উল্লেখ করে দেন।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছি আমরা। তবে কবে থেকে ক্লাস শুরু হবে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেবে।

তিনি জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনলাইনে পড়ানো শুরু করতে পারবে শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীরাও এটার ওপর প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করতে পারবে।

এদিকে ২০২১ সালে এসএসসিতে অটোপাসের দাবিতে আন্দোলন করছে একদল শিক্ষার্থী। গত ২৭ জানুয়ারি দুপুরে এনসিটিবিতে সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদিকদের বলেন, আমরা যদি মধ্য ফেব্রুয়ারিতে স্কুল খুলতে পারি তাহলে ঈদের আগে সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটি বাদ দিলে ৬০ দিন এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস হবে। প্রতিদিন ছয়টা ক্লাস ধরে মোট ৩৬০ ক্লাস হবে। ১২ বিষয়ে গড়ে সর্বোচ্চ ৩৬০ ক্লাস ধরে সিলেবাস হবে। তবে বিষয়ের গুরুত্ব বুঝে বিষয়ভিত্তিক কম বেশি ক্লাস হতে পারে।

উদাহরণ হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এক সপ্তাহে একটা সাবজেক্টের তিনটি ক্লাস হলো- তিনটা ক্লাসে যতটুকু পড়ানো হলো কিংবা দেড় সপ্তাহ মিলে দুটো অধ্যায় শেষ হলো। তখন শ্রেণি শিক্ষক একটা ছোট পরীক্ষা নিবেন। তাতে শিক্ষার্থীর প্রস্তুতি হয়ে যাবে। এজন্য কোনো প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোনো ধরনের ফি নিতে পারবে না।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ঈদের পর ১৮ মে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে জুনে এসএসসি পরীক্ষার নেওয়ার রুটিন দেওয়া হবে। পরীক্ষার আগ পর্যন্ত স্কুলগুলো মক টেস্ট, প্রি-টেস্ট বা টেস্ট বা যেকোনো নামের কোনো টেস্ট পরীক্ষা নিতে পারবে না। শুধু ক্লাস হবে আর শ্রেণি কক্ষে শ্রেণি শিক্ষক এক-দুইটা অধ্যায়ের পাঠদান শেষে ক্লাসে পরীক্ষা নিবেন।

এইচএসসির সংক্ষিপ্ত সিলেবাস সংক্ষিপ্ত হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এভাবে যদি ১৫ জুন পর্যন্ত ক্লাস করানো যায় তাহলে ৮৪ দিন ক্লাস পাবে। মোট ৫০৪ ক্লাস হবে। গড়ে ৩৮ ক্লাস পাবে। সেটাও সিলেবাস অনুযায়ী সিলেবাস প্রণয়ন কমিটি ভাগ করে দিবেন।

কোন বিষয়ে কয়টা ক্লাস হবে ও তাদের যে বিষয়গুলোতে ব্যবহারিক পরীক্ষা আছে সেগুলোতে ৯ মে এসএসসির এবং ১৫ জুন এইচএসসির জন্য ক্লাস শেষ হবে ধরে নিচ্ছি। তার পরের সময়টা স্কুলগুলো ব্যবহারিক করিয়ে নিবে। আর ব্যবহারিকের সিলেবাসও সংক্ষিপ্ত হবে।

পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক নম্বর কমবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিলেবাসের সঙ্গে পরীক্ষার সাবজেক্টের মানবন্টন দিয়ে দেব। এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে হবে না। তারপরও যদি কারো কোনো প্রশ্ন থাকে সেগুলো সময় সময় পরিবর্তনযোগ্য।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *