ঝিনাইদহে কর্মসৃজন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৪ নং হলিধানী ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের (৪০ দিনের কর্মসূচি) শ্রমিকদের সীমকার্ড ইউনিয়ন পরিষদে রাখার অভিযোগ করেছে শ্রমিকরা। শ্রমিকদের মজুরির টাকা আসবে নিজ নিজ মোবাইল সীমকার্ড ব্যাংকিং একাউন্টে কিন্তু সে সীমকার্ড শ্রমিকদের কাছ থেকে নিয়ে রেখে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বরের বিরুদ্ধে।

কর্মসূচির কাজ নিঃসন্দেহে ভালো মানের হচ্ছে, কিন্তু যে শ্রমিকগুলো কাজ করছে তাদের কপাল পুড়িয়ে দিচ্ছেন এই সকল শ্রমিকদের ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান-মেম্বর। শ্রমিকদের টাকা যাতে নয়-ছয় না হয় এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের মজুরির অর্থ প্রদান করা হচ্ছে তাদের নামে নিবন্ধিত মোবাইল ব্যাংকি একাউন্টের মাধ্যমে, কিন্তু সরকার ভালো ভালো উদ্যোগ নিয়ে কি করবে, কিছু জনপ্রতিনিধিরা তো সরকারের নেওয়া সময় উপযোগী পদক্ষেপ গুলোর সঠিক ব্যবহার করতে চান না। শ্রমিকদের সীমকার্ড জনপ্রতিনিধিদের কাছে আছে কিনা এমন অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সংবাদকর্মীরা যান ৪ নং হলিধানী ইউনিয়নের ০৭ নং ওয়ার্ডের রামচন্দ্রপুর গ্রামে। সরেজমিনে গিয়ে কর্মরত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা সবাই নিজেদের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, ছবি দিয়ে নতুন সীমকার্ড তুলে নিজ নিজ ওয়ার্ডের মেম্বরদের কাছে জমা দিয়ে পরবর্তীতে এই সীমকার্ড আর ফেরত পাননি। কর্মরত শ্রমিকরা আরো জানান তাদের প্রতিদিন জন প্রতি হাজিরা ৪০০/=(চারশত টাকা) টাকা দেওয়ায় কথা থাকলেও গত ২৬ দিন কাজ করে তারা পেয়েছেন কেউ ৩৬০০/= ও কেউ ৩২০০/= টাকা। আপনাদের সীমকার্ড কি আপনারা চেয়ারম্যান ও মেম্বরের কাছে চেয়েছেন জানতে চাইলে শ্রমিকরা বলেন আমরা চেয়েছি কিন্তু আমাদের মেম্বর দেইনি।

এ সম্মন্ধে জানতে চাইলে ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য (মেম্বর) মালা খাতুন জানান এই সীমকার্ড আমি শ্রমিকদের হাতে দিয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু পরে শহিদুল মেম্বর সীমকার্ড নিয়ে নেয়। ০৪ নং হলিধানী ইউনিয়নের ০৭নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলাম এর জানতে চাইলে তিনি বলেন এসব বিষয়ে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলুন। হলিধানী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ শওকত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন সীমকার্ড আমার কাছে আসার সাথে সাথে শ্রমিকদের দিয়ে দিয়েছি।

এ বিষয়ে ৪ নং হলিধানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাড.এনামুল হক নিলু’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রমিকদের এই অভিযোগকারী শ্রমিকদের নাম জানতে চান এবং বলেন, আমরা শ্রমিকদের সাথে কথা বলে সিমকার্ড গুলো আমাদের কাছে রেখে দিয়েছি কারণ তারা বলেছে আমরা এগুলো সম্পর্কে বুঝিনা আপনি সিমকার্ড গুলো রেখে দেন। তিনি আরও বলেন, সকল মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে টাকা আসেনি তাই আমরা সর্বসম্মতিক্রমে যে অর্থগুলো মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়েছে তা কমবেশি করে সমন্বয় করার চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে মুঠোফোনের মাধ্যমে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জনাব নিউটন বাইন বলেছেন আমরা প্রকল্পের অর্থ মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে ছাড় দিয়ে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন কোনো মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টের সিমকার্ড ইউনিয়ন পরিষদের রাখার কথা না, যার সিমকার্ড তার কাছে থাকবে। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *