বন্যায় ডুবছে কৃষকের স্বপ্ন!

তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলের শত শত একর ফসলি জমি। আগাম এ বন্যায় কেড়ে নিয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। পরিপক্ক হওয়ার আগেই বাদাম ও ভুট্টাক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় এখন মলিন কৃষকের মুখ।

তিস্তা চরাঞ্চলের কৃষকেরা জানায়, বাদাম ও ভুট্টা চাষে ভালো লাভবান হওয়া যায়। তাই তারা প্রতি বছরেই বাদাম ও ভুট্টা চাষ করে। কিন্তু হঠাৎ তিস্তার পানি বেড়ে গিয়ে সব ফসল তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকের পুরো বিনিয়োগই লোকসানের ঝুঁকিতে পড়েছে।

জানা গেছে, উজানে ভারতের পাহাড়ি ঢল ও গত তিন দিনের ভারি বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরেত ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিস্তার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকার রাস্তা-ঘাট ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ। নিদারুণ বিপাকে পড়েছেন বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ও শিশুরা। গবাদি পশু পাখি নিয়েও চরম বিপাকে পানিবন্দি পরিবারগুলো। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

তিস্তার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জেগে ওঠা চরে বাদাম ও ভুট্টাসহ নানান জাতের সবজি চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন চরাঞ্চলের মানুষ। দুই সপ্তাহ ধরে থেমে থেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় চরাঞ্চলের চাষিদের উঠতি ফসলের ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে যায়। কেউ কেউ পানিতে ডুবে ডুবে বাদাম সংগ্রহ করলেও তা পানি পাওয়ায় অঙ্কুরোদগম ঘটছে। ফলে চাষাবাদে খরচ তোলা নিয়েও শঙ্কায় চাষিরা। ভুট্টা ক্ষেতেও একই অবস্থা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তাতে অঙ্কুরোদগম ঘটছে। অনেকেই সামান্য রোদে শুকানো নিয়েও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সেটাও করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পুরো বিনিয়োগই লোকসানের ঝুঁকিতে পড়েছে অনেক কৃষক।

তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন,রবিবার ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।ব্যারেজ রক্ষার্থে ৪৪টি জল কপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এতেও বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির কোনো সম্ভবনা নেই।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, বন্যায় যাদের ফসল তলিয়ে গেছে তাদের তালিকার করা হচ্ছে। একেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ত্রাণ সহায়তা দিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *