বৃহস্পতিবার থেকে জরুরি সেবা ছাড়া দোকানপাট বন্ধ

ছবি: মর্নিং নিউজ বিডি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় খুলনায় ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানসহ জরুরি সেবা বাদে সব ধরনের দোকানপাট ১৪ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে। এমনকি নগরের ফুটপাতে কোনও হকার অবস্থান করবেন না। ইজিবাইকসহ অন্যান্য যান চলাচল সীমিত করা হবে। মানুষের ভিড়, মাস্ক ছাড়া চলাচল করা হবে না। মাস্ক ব্যবহারের নামে নাক-মুখ উন্মুক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুলনা জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গঠিত কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (৯ জুন) দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সভায় উপিস্থত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা।

এছাড়া সভায় ঢাকা থেকে অনলাইনে যুক্ত হন খুলনার করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন।

সভায় আরও যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তা হলো, অধিক সংখ্যক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের লক্ষ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজে আরও একটি পিসিআর মেশিন স্থাপন করা হবে। বর্তমানে ওই ল্যাবে দৈনিক সর্বোচ্চ ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা যায় যা যথেষ্ট নয়। এছাড়া সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজেও একটি করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

খুলনায় ক্রমাগতভাবে কোভিড-১৯ রোগী বাড়তে থাকলে তাদের চিকিৎসায় খুলনা সদর হাপাতালের চতুর্থ তলায় ৪২টি বেড প্রস্তত করে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট লাঘবে ডায়াবেটিক হাসপাতালে দুটি অক্সিজেন হাই ফ্লো নজেল ক্যানেল ক্রয়েরও সিদ্ধান্ত হয়। কোভিড-১৯ রোগীদের কিডনি ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন পড়লে শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পাঁচটি ডায়ালাইসিস বেড ব্যবহার করা হবে। খুলনার সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো সংগ্রহ করে খুলনা কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হবে। করোনাভাইরাস নমুনা সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে আরও একটি গাড়ি সিভিল সার্জনকে দেওয়া হবে। নগরীর রয়্যাল মোড়ে অবস্থিত দূরপাল্লার গাড়িগুলোর কাউন্টার থেকে যাত্রী ওঠা-নামা বন্ধ থাকবে।

সভায় জানানো হয়, এ পর্যন্ত খুলনায় ২১৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪২ জনই খুলনা নগরীতে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসালম, পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম শফিউল্লাহ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সী মো. আব্দুল আলিম, জেলা শিক্ষা অফিসার খোন্দকার রুহুল আমিন, খুলনা প্রেসক্লাবে সভাপতি এস এম নজরুল ইসলামসহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার থেকে দুই সপ্তাহের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও ফার্মেসি ব্যতীত খুলনার সব মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে। এছাড়া দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি গ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ওই এলাকাও বৃহস্পতিবার থেকে লকডাউন করা হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *