গোটা বিশ্ব বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে থমকে গিয়েছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ মৃত্যুকোলো ঢলে পরছে। সেই সংখ্যা থেকে রেহাই পায়নি বাংলাদেশও। প্রতিদিন আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। এড়াতে পারেনি দেশের একমাত্র বাণিজ্যিক রাজধানী বন্দর নগরী চট্টগ্রামও। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের করোনা হটস্পটে পরিণত হয়েছে এই চট্টগ্রাম।
মহামারি করোনায় আক্রান্তের সাথে সাথে চট্টগ্রামে শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে খুব দ্রুত। এতে শ্বাসকষ্টের রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়ে পরেছে অক্সিজেন। আর সেই অক্সিজেন সংকটে চট্টগ্রামে প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে কারো না কারো প্রিয়জন। এমনকি অক্সিজেনের এমন সংকট দেখে করোনা আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম ছেড়ে চিকিৎসা নিতে ঢাকায় ছুটেছেন শিল্পপতিসহ কয়েকজন এমপি। শ্বাসকষ্টে বিপর্যস্থ প্রিয়জনকে বাঁচাতে যখন চট্টগ্রামে অক্সিজেনের হাহাকার, ঠিক সেই মুহূর্তে চট্টগ্রামে শ্বাসকষ্টের রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডার রোগীদের ঘরে ঘরে পৌঁছিয়ে দিচ্ছেন মানবতার সেবক চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চৌধুরী বাবু।
যতই রাত হোক না কেনো ফোন বেজে ওঠার সাথে সাথেই বাইকে করে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন কখনো বাসায় কিংবা কখনো হাসপাতালে। এই প্রসঙ্গে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, “যখন করোনা পজিটিভ শুনেই মানুষ আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তখন নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, ঔষুধ সহ চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে আমি তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি। যখনই আক্রান্ত পরিবারের ফোন পেয়েছি সাথে সাথেই তাদের সব রকমের সেবা দিয়েছি।করোনা সন্দেহে যখন পরিক্ষার জন্য রোগীরা বিভিন্ন জায়গায় গিয়েও পরিক্ষা করাতে পারেনি আমি তেমন অনেকের পরিক্ষা করানোর ও ব্যবস্থা করেছি।”
বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত সনাক্তের পর থেকেই এলাকায় জীবানু নাশক স্প্রে ছিঠানো এবং প্রতিটি বাড়িতে স্প্রে মেশিন সহ জার বিতরন কার্যক্রম শুরু করেন অমিতাভ চৌধুরী বাবু। এর পরবর্তিতে লকডাউন শুরুর প্রথম দিন থেকেই চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় মধ্যবিত্ত নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ফোন কল পাওয়ার সাথে সাথেই প্রায় ২০০০ পরিবারে নিজ উদ্দ্যেগেই খাদ্যসামগ্রী পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রাত কিংবা দিন, ঝড় কিংবা বৃষ্টি চিন্তা করিনি, যখনই মানুষ ফোন করেছেন তখনই খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ছুটে গেছি। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে পিতা হারানোর যন্ত্রনা আমাকে প্রতিনিয়ত কাঁদাই, আমি জানি চোখের সামনে স্বজন হারানোর ব্যাথা কেমন, চট্টগ্রামে শ্বাসকষ্টের রোগী অক্সিজেনের অভাবে মারা যাওয়ার মর্মান্তিক ঘটনা আমাকে খুবই ব্যতিত করেছে। তখনি ভাবলাম বাবাকে বাঁচাতে পারিনি কিন্তু আমিতো চাইলে কিছু অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করতে পারি। সেই চিন্তা থেকেই বর্তমানে ৭ টি সিলিন্ডার দিয়ে এই সেবার কাজ শুরু করেছি। তবে সিলিন্ডার আরো বাড়ানোর চেষ্টা করছি।”
চট্টগ্রামের কোনো রোগীর করোনা সম্পর্কিত কোনো তথ্য বা ইমার্জেন্সি সেবা, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও রিফিল এর প্রয়োজন হলে ০১৭১১০০৬৮১৬ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন মানবতার সেবক অমিতাভ চৌধুরী বাবু।