২০২২ সাল আসতে এখনও বেশ দেরি। সেই বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে কাতারে বসার কথা রয়েছে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর। তবে করোনাভাইরাস মহামারি দু’বছর বাদের বিশ্বকাপ ফুটবলকেও ফেলেছে ভিন্ন এক শঙ্কায়। করোনার কারণে পুরো বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা নাজুক পর্যায়ে পৌঁছানোর একটা শঙ্কা থাকছে। এমন অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শকরা টাকা খরচ করে দলে দলে কাতারে আসবেন- এই চিন্তাটা বড় বেশি অবাস্তব। বিশ্বব্যাপী সম্ভাব্য এই অর্থনৈতিক মন্দার কু-প্রভাব পড়তে পারে ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের ওপর-এই আশঙ্কা করছে কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক কমিটি।
কমিটির মহাসচিব হাসান আল তাওয়াদি জানান- ‘পুরো ব্যাপারটা আসলে এখনো পরিষ্কার নয়- আমরা বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে পড়তে যাচ্ছি। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফুটবল দর্শকরা বিপুল অর্থকড়ি খরচ করে বিশ্বকাপ দেখতে কাতারে আসবেন- সেই সম্ভাবনা নিয়ে বড় সংশয় তো থাকছেই।’
করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্ট স্থগিত অথবা বাতিল করা হয়েছে। টোকিও অলিম্পিক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে ২০২১ সালে। ইউরোপিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপও পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সামনের বছরে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ফুটবল লিগ বাতিলও করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির প্রত্যক্ষ একটা প্রভাব পড়েছে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের ওপরও। এই বিশ্বকাপ উপলক্ষে এখনো ছয়টি স্টেডিয়াম নির্মাণাধীন। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে শ্রমিক সঙ্কটে এই স্টেডিয়ামগুলোর নির্মাণ কাজও বন্ধ। তবে বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটি আশা করছে যেহেতু এখনো হাতে বেশ সময় আছে তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এসব স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
কাতার বিশ্বকাপের স্থানীয় আয়োজক কমিটির প্রধান আল তাওয়াদি জানান- ‘আমরা আশা করছি ২০২২ সালের মধ্যেই করোনাভাইরাস মহামারীর বিরুদ্ধে জয়ী হবো। ২০২২ সালের বিশ্বকাপে আমরা সবাই মিলে সেই খুশির আনন্দ, সেই জয়ের আনন্দ উপভোগ করব।’
কাতারের আটটি স্টেডিয়ামে ২০২২ সালের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। দেশটির এক শহর থেকে আরেক শহরে যাতায়াতের জন্য যে পরিমাণ বিমান ভাড়া খরচ হবে- সেই হিসেব করে বিশ্বকাপের উৎসবে যোগ দিতে অনেকে আগ্রহ হারাতে পারেন!
এই প্রথমবারের মতো কাতার বিশ্বকাপের আয়োজন করছে। এর আগে এশিয়ার দেশ হিসেবে ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান যৌথভাবে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন করেছিল।
কাতারের বিশ্বকাপ আয়োজক হওয়া নিয়েও বড় জটিলতা ও সমালোচনা রয়েছে। অভিযোগ আছে, ফিফার কার্যকরী কমিটির বিভিন্ন সদস্যকে ঘুষ দিয়ে কাতার বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এই অভিযোগেই ফিফার সাবেক সভাপতি সেপ ব্লাটারের ফুটবল সংগঠক হিসেবে ক্যারিয়ারও শেষ হয়ে যায়।