যোগাযোগব্যবস্থাই উন্নয়নের চাবিকাঠি। এ বিষয়টি মাথায় রেখে বর্তমান সরকার প্রতিটি এলাকার যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যাপক প্রকল্প হাতে নিয়েছে এবং তা নগর হতে পল্লী পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের প্রধান সড়কের একটি অংশে সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থা বিরাজমান। কবির বাপের মার্কেট হতে করিমদাদ মিয়ার ঘাট পর্যন্ত এই সড়কের বর্তমান অবস্থা খুবই নাজুক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উজানটিয়া ইউনিয়নের প্রধান এই সড়কটির প্রায় দুই কিলোমিটার কাদায় পরিপূর্ণ। সংস্কারের উদ্দেশ্যে সড়কে থাকা ইটগুলো ২০১৯ সালের গ্রীষ্ম মৌসুমে খুলে নেওয়ার পর এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সড়কটি সংস্কারের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। ফলে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি শুরু হলে রাস্তা পরিণত হয় কাদার স্তুপে।
মিয়া পাড়া, ফেরাসিংগা পাড়া, সৈকত বাজার পাড়া, করিয়ারদিয়া- এই চার পাড়ার প্রায় দশ হাজারের অধিক মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রম এই রাস্তার ওপর নির্ভরশীল। ফলে স্থবির হয়ে আছে তাদের জীবনযাত্রা, ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক কার্যক্রম, সেইসঙ্গে মুমূর্ষু রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে দ্রুততম সময়ের মাঝে চিকিৎসাসেবা হতে।
এ ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও অত্র এলাকার বাসিন্দা পারভিন আক্তার মর্নিং নিউজ বিডিকে বলেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে রাস্তাটি এভাবে ফেলে রাখা হয়েছে, কিন্তু কাজের কোনো হদিস নেই। এই দুর্ভোগ মানুষের জন্য অসহনীয় হয়ে গেছে।
রাস্তার কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার বিষয়ে উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. শহীদুল ইসলাম চৌধুরী মর্নিং নিউজ বিডিকে জানান, উন্নয়ন করার ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও গত বছর ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে থমকে ছিল এই সড়কটির সংস্কার-কাজ। নতুন করে ঠিকাদার পরিবর্তন করে টেন্ডার হয়েছে। আশা করি দ্রুত কাজ শুরু হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম বলেন, সড়কটির ব্যাপারে নতুন করে টেন্ডার হয়েছে। করোনার প্রকোপের কারণে ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারছে না। শীঘ্রই কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারকে অবহিত করা হয়েছে।
সড়কটি সংস্কারের ক্ষেত্রে বিলম্বের কারণ জানতে চাওয়া হলে- প্রকল্পটির প্রথম ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে কাজ বন্ধ ছিল ফলে আমরা ঠিকাদার পরিবর্তনের কথা চিন্তা করি এবং নতুন ঠিকাদারের মাধ্যমেই কাজ শুরু করা হবে বলা জানান প্রকৌশলী জাহেদুল আলম।
নতুনভাবে কাজের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদার ফরিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সংস্কারের উদ্দেশ্যে এই সড়কটি খোলে ফেলা হয়। দায়িত্ব দেওয়া হয় পার্শ্ববর্তী উপজেলা চকরিয়ার ফাঁশিয়াখালীর ঠিকাদার সাহেদকে। কিন্তু ঠিকাদারের উদাসীনতার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে সড়কের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি।