অর্থাভাবে চিকিৎসাহীন সাংবাদিক ও লেখক কপিল ঘোষ মৃত্যুর প্রহর গুনছেন!

‘মানুষ মানুষের জন্য’ এই মানবিক আবেদনময়ী অসংখ্য সংবাদ যিনি করেছেন বিগত ২৫ বছর ধরে, সেই সাংবাদিক ও লেখক কপিল ঘোষ নিজেই অসুস্থ। ২২ বছর আগে সন্ত্রাসী হামলায় মারাত্মক আহত হওয়ার পুরনো ব্যাথা এখন তার শিরা-উপশিরায় ও মেরুদন্ডের তীব্র যন্ত্রণারূপে দেখা দিয়েছে। ফলে স্বাভাবিক চলাফেরা করা কষ্টকর। টাকার অভাবে তাঁর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হচ্ছে না। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেও সাড়া মেলেনি। এই অবস্থায় তিনি সবার সহযোগিতা প্রার্থী। অন্যের জন্য যিনি জীবনভর কাজ করে আসছেন এখন তিনি নিজেই অসহায়। একদিকে সংসারের টানাপড়েন। অন্যদিকে মরণব্যাধি ঘিরে ধরেছে। অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না তার। এমন দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা লেখক ও সাংবাদিক কপিল ঘোষ।

ঘোষের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হচ্ছে না তার। গত ৫ বছর ধরে মেরুদণ্ডে তীব্র ব্যথা-যন্ত্রণা নিয়ে বাড়িতে বিছানায় পড়ে আছেন। পাশাপাশি শিরা-উপশিরা শুকিয়ে গেছে। এ ছাড়া মাঝে-মধ্যে পায়ের পাতা অস্বাভাবিক ফুলে ওঠে। স্বাভাবিক চলাফেরা করা কষ্টকর।

বাংলাদেশ ও ভারতের চিকিৎসকদের মতে, ঘোষ এইচএলএবি-২৭ পজেটিভ পিএলআইডি রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার মেরুদণ্ডের হাড়ের একাধিক ডিস্ক ফাঁকা হয়েছে। তার দীর্ঘমেয়াদি উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।

কপিল ঘোষ জানান, ১৯৯৭ ও ২০০২ সালের ৬ই জুন পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে তিনি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। পরবর্তীতে এসব আঘাতের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি দেশে ও ভারতে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে গিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। পরিবারে তিনি উপার্জনক্ষম হওয়ায় বর্তমানে সংসারে ২ সন্তানের পড়াশুনা চালানো ও নিজের চিকিৎসা নিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ অবস্থায় তার পরিবার সরকার এবং হৃদয়বানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। বর্তমানে কপিল ঘোষ কালের কণ্ঠের চিতলমারী ও কচুয়া উপজেলা প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করছেন।

তার লেখা একাধিক গবেষণামূলক গল্পের বই ঢাকায় মহান একুশে বইমেলায় শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে। তিনি ১৯৯৮-২০০৫ সাল পর্যন্ত দৈনিক যুগান্তর, ২০০৬ সালে দৈনিক সমকাল পত্রিকায় কাজ করেন। এ ছাড়া ২০০৮-২০১৮ সাল পর্যন্ত খুলনায় এনজিও রূপান্তরের কর্মী ছিলেন।

এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল বলেন, অর্থাভাবে সাংবাদিক ও লেখক কপিল ঘোষের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হচ্ছে না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তিনি সাংবাদিকতার মাধ্যমে এলাকায় অনেক অবদান রেখেছেন। এই মুহূর্তে জরুরিভাবে তার পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *