লক্ষ্মীপুরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে চলছে চিংড়ি পোনা নিধন

ছবিঃ মর্নিং নিউজ বিডি

লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদী ও সংযোগ খাল থেকে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চিংড়ির পোনা সংগ্রহ করছে জেলেরা। এতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

মেঘনায় রেণু পোনা আহরণের কারণে দিন দিন অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ছে গলদা-বাগদাসহ নানা প্রজাতির মাছ।

স্থানীয়দের অভিযোগ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তদারকির সাথে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়ায় বেঅাইনিভাবে অবাধে মাছের পোনা নিধন চলছে।

জেলা মৎস্য অফিস জানায়, ২০০০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে উপকূলীয় এলাকা থেকে বাগদা চিংড়ির পোনা আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদী ও উপকূলীয় এলাকার জেলেরা পোনা অাহরন করছে। এতে ভাল আয়ের সুযোগ থাকায় অভিযান চালিয়েও রেণু আহরণ থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না জেলেদের।

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে রায়পুর পর্যন্ত মেঘনা নদীর বিস্তীর্ণ এলাকা ও সংযোগ খালগুলোতে চলছে গলদা-বাগদা চিংড়ির পোনা নিধন। প্রতি বছর বৈশাখ থেকে আষাঢ় রেণু শিকারে মেতে উঠেন সকল বয়সের নারী-পুরুষ। মহাজনদের অগ্রিম টাকায় রেণু শিকার করছেন তারা। আর এ পোনা নদী পাড়ে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে। পরবর্তীতে রাতের আঁধারে খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হচ্ছে।

আরও জানা যায়, অতি ক্ষুদ্র হওয়ায় এসব পোনা ধরতে মশারি জাল ও ছাকনি ব্যবহার করা হয়। এসময় চিংড়ির সাথে বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য পোনা উঠে আসে। চিংড়ির পোনা বাছাইয়ের সময় বাইলা, সুরকা, পোয়া, পাঙ্গাশ, পাবদাসহ অর্ধশতাধিক প্রজাতির মাছের ডিম ও পোনা নষ্ট হয়ে যায়।

এই বিষয়ে একজন পোনা শিকারি জানান, বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় তারা  এই রেণুপোনা শিকার করছেন। প্রতিদিন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ পোনা ধরতে পারেন তারা। প্রতিটি পোনা তারা আড়তদারদের কাছে এক-দুই টাকা দরে বিক্রি করেন। আর আড়তদাররা চিংড়ি মালিকদের কাছে বিক্রি করেন প্রতিটি পোনা প্রায়ই আড়াই-তিন টাকা দরে।

ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, মেঘনার চিংড়ি পোনা অল্প সময়ে বড় হয়ে যায়। এজন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তের চিংড়ির ঘের মালিকদের কাছে মেঘনার পোনার কদর বেশি। তাছাড়া রেণু শিকারের সঙ্গে উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকা জড়িত। তাই তারা পোনা না ধরে থাকতে পারে না।

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘পোনা ধরা প্রতিরোধে মেঘনায় কয়েকটি অভিযান করা হয়। সম্প্রতি রামগতিতে অভিযান চালিয়ে ৪ লাখ টাকার চিংড়ি পোনা জব্দ করা হয়েছে। তাছাড়া ব্যবসায়ীরা ক্রয় করায় স্থানীয়রা পোনা শিকার করছেন। এজন্যই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান করা হচ্ছে। তাছাড়া রেণু শিকারি ও ব্যবসায়ীদের শাস্তির বিষয়ে তৎপর রয়েছে প্রশাসন।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *