করোনার নেতিবাচক প্রভাব কাটাতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানালো বাংলাদেশ

করোনার এই সংকটময় মুহূর্তে বাণিজ্য-অংশীদারগণকে আরো দায়িত্বশীল বাণিজ্যিক আচরণের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে
নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

তিনি বলেন, এটি অর্থনীতি বা বাণিজ্য সংরক্ষণবাদের সময় নয়। স্বল্পোন্নত দেশসমূহকে তাদের পূর্ব-প্রতিশ্রুত বাজারে অবাধ
প্রবেশাধিকার দিতে হবে।

তিনি গতকাল নিউইয়র্কে এসডিজি অর্থায়নের সমমনা দেশসমূহ আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ সময়ে এসডিজি অর্থায়ন’ শীর্ষক এক
ভার্চুয়াল সভায় যোগ দিয়ে একথা বলেন। খবর তথ্যবিবরণীর।

রাবাব ফাতিমা করোনাজনিত বৈশ্বিক মহামারির প্রেক্ষাপটে ‘বিপর্যস্ত গ্লোবাল ভ্যালু চেইন’এর চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরেন এবং এর
ভয়াবহ প্রভাবের ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে ব্যাপকহারে কারখানা শ্রমিকরা চাকুরি হারাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন।

বৈশ্বিক এই মহামারিকে বিশ্বস্বাস্থ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক সঙ্কট হিসেবে উল্লেখ করেন স্থায়ী প্রতিনিধি। অংশগ্রহণকারী
সুধিজনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এর প্রভাব আগামী কয়েক বছর ধরে নাজুক দেশগুলোর জনগণ ও অর্থনীতিকে বহন করতে হবে।

ইতোমধ্যে কোভিড-১৯ এর কারণে অনেক দেশে এসডিজি বাস্তবায়ন পরিকল্পনা বন্ধ রাখতে হচ্ছে, কেননা দেশগুলো তাদের সীমিত
সম্পদ জরুরি স্বাস্থ্য ও বাড়তি সামাজিক সুরক্ষার প্রয়োজন মেটাতে ব্যয় করতে বাধ্য হচ্ছে।

বাংলাদেশের মতো দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ হ্রাস এবং অভিবাসী শ্রমিকদের প্রত্যাবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার মতো নেতিবাচক
পরিস্থিতির উদাহরণ টেনে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, আজ অভিবাসীগণ স্বাস্থ্য, আর্থ-সামাজিক এবং সুরক্ষাজনিত সঙ্কটের মধ্যে
পড়েছেন।অভিবাসী গ্রহণকারী দেশসমূহ এই সঙ্কট মোকাবিলা ও উত্তরণে যেসকল পরিকল্পনা গ্রহণ করছে তাতে অভিবাসীদেরকেও
অন্তর্ভুক্ত করার এবং তাদের অধিকার রক্ষার আহ্বান জানান তিনি।

রাষ্ট্রদূত ফাতিমা করোনা মহামারিতে দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের পাশাপাশি গ্রুপ ভিত্তিক সহায়তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ
সরকার ১২ দশমিক এক বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, এই প্রণোদনা প্যাকেজ দেশের জিডিপির ৩ দশমিক ৭ ভাগ। অপ্রত্যাশিত এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে আরও শক্তিশালী বৈশ্বিক
সংহতি ও সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, কোভিড-১৯ এর মতো মহামারি থেকে টেকসই
প্রত্যাবর্তন অর্থাৎ এই দুর্যোগ মোকাবেলা করে ঘুরে দাড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করতে বৈশ্বিক অর্থায়ন প্রক্রিয়াগুলোতে নাজুক উন্নয়নশীল
দেশগুলোর ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই দেশগুলোতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন গতি
সঞ্চার করতে বেসরকারি ঋনদানকারীর পাশাপাশি ব্যক্তিগত অলস মূলধনও রাখতে পারে কার্যকর ভূমিকা।

জলবায়ুজনিত প্রভাব মোকাবেলার অর্থায়নে আরও জোর প্রচেষ্টা গ্রহণের আহ্বান জানান স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি বলেন, এই প্রচেষ্টাসমূহ
নাজুক দেশগুলোকে ভবিষৎ দুর্যোগ মোকাবিলায় আরও সক্ষম করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *