চট্টগ্রামে খোঁজ মিলছে না ৮৫ করোনা রোগীর, ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৮৫ জন রোগীর কোনো খোঁজ মিলছে না। ধারণা করা হচ্ছে ইচ্ছাকৃতভাবে নমুনা দেওয়ার
সময় এরা ভুল ঠিকানা ও ফোন নম্বর দিয়েছেন। এমতাবস্থায় তথ্য গোপন করে কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়া এই ৮৫ জন হয়তো
নিজেদের অজান্তেই করোনা বিষ ছড়িয়ে যাচ্ছেন বন্দর নগর কিংবা দেশের আনাচে-কানাচে।

এক্ষেত্রে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এ বিষয় নিয়ে বিশেষ ভাবনা বা চিন্তার ছাপ লক্ষণীয় নয় । তাদের দায়বদ্ধতা ততক্ষণ পর্যন্ত
যতক্ষণ না পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) করোনা রোগীর তালিকা পাঠানো হচ্ছে। এককথায় শনাক্ত হওয়া রোগীর তালিকা পুলিশ
বরাবর পৌঁছাতে পারলেই রোগী খোঁজে বের করার ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্বের পরিসমাপ্তি ঘটে। এদিকে অসম্পূর্ণ ঠিকানা, ভুল নম্বর
দেওয়া, লিস্টে দেওয়া নম্বরের ডিজিট কম থাকা সহ ভুল তথ্যের কারণে নগর পুলিশের বিশেষ শাখা এই ৮৫ জন রোগীর কোনো
হদিস বের করতে পারেনি এখনো পর্যন্ত।

চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া তিন হাজার ৫৩৭ জনের মধ্যে ৮৫ জন করোনা রোগীর ঠিকানা না পাওয়ার কথা জানিয়েছে
সিভিল সার্জন কার্যালয়। ফলে ঠিকানাবিহীন ওই ৮৫ জনকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো যায়নি তাদের
করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরও।

ঠিকানাবিহীন এই ৮৫ জনকে নিয়ে কী ভাবছে সংশ্লিষ্টরা— তা জানতে জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বীর সাথে
যোগাযোগ করা হলে তিনি মর্নিং নিউজ বিডিকে বলেন, ‘এগুলো তো আমরা সব পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চকে (এসবি) দিয়ে দিই।
উনারা মোবাইল ট্র্যাক করে পরে বের করে ফেলেন। কাজেই এই সমস্যাগুলো খুব দ্রুত সমাধান হয়ে যায়।’

অসম্পূর্ণ ঠিকানা, ভুল নম্বর দেওয়া, লিস্টে দেওয়া নম্বরের ডিজিট কম থাকা সহ তথ্যগত নানা কারণে এই ৮৫ জনের সাথে যোগাযোগ
স্থাপন করতে পারেনি এবং এদের সাথে আর যোগাযোগ স্থাপনের কোন সম্ভাবনাও দেখছেন না বলে জানায় পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ শাখার উপ কমিশনার আব্দুল ওয়ারিশ খান বলেন, ‘অনেকগুলো নম্বরেই অসম্পূর্ণ ঠিকানা থাকে।
সেক্ষেত্রে আমরা লিস্টে দেওয়া নম্বর ট্র্যাক করে বের করি। কিন্তু এই নম্বরগুলো ট্র্যাক করাও সম্ভব হয়নি। কারণ হয় নম্বরগুলো বন্ধ,
নাহলে ১১ ডিজিটের জায়গায় ১০ ডিজিট দেওয়া। ফলে এগুলো ট্র্যাক করে ঠিকানা বের করা যায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতে সবচেয়ে বড় সমস্যা যা হয়েছে তা হলো এই লোকগুলো জানলোই না তারা করোনা পজিটিভ হয়েছে। আমরাও
তাদের আইসোলেশনে নেওয়ার কোন পদক্ষেপ নিতে পারিনি।’

এই সমস্যার পেছনে দুটি কারণ দেখছেন উপ কমিশনার-রোগী নমুনা দেওয়ার সময় তথ্য প্রদানের ফরমে ভুল করতে পারেন। অন্যদিকে
সেই ফরমে তিনি ঠিক লিখলেও সেখান থেকে ইনপুট দেওয়ার সময় দায়িত্বরত ব্যক্তিও ভুল করতে পারেন।

এই দুই ক্ষেত্রে সতর্কতা না বাড়ালে এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে আর এই মুহূর্তে সচেতনতা ও প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও জোরদার করলে
এসব ছোট ছোট বিষয়ের অনেক সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করেন এই পুলিশ অফিসার।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *