দীর্ঘ আক্ষেপের অবসান হলো লিভারপুলের। ৩০ বছরের সেই আক্ষেপ ঘোচাতে ১২৮ বছরের এই ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের দিশারী এক জার্মান ভদ্র লোক।
জার্গেন ক্লপ নামের এই ব্যক্তি লিভারপুলের শিরোপা জয়ের পর আত্মহারা হয়েছেন। খুঁজে পাচ্ছেন না অনুভূতি প্রকাশের ভাষা। চোখের অশ্রু হয়ে নেমে এলো যেন তার খুশির জোয়ার। যে অশ্রু মূল্য মুক্তোর চেয়ে দামী।
শিরোপা জয় নিশ্চিত করার দিনে লিভারপুলকে অবশ্য মাঠে নামতে হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে চেলসির মাঠে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির হেরে যাওয়ায় সাত ম্যাচ বাকি থাকতেই নিশ্চিত হয়ে গেছে লিভারপুলের শিরোপা।
১৯৮৯-৯০ মৌসুমে সবশেষ লিগ জিতেছিল লিভারপুল। এবার শেষ হলো তাদের তিন দশকের প্রতীক্ষা। ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে এটি তাদের ১৯তম এবং প্রিমিয়ার লিগ যুগে প্রথম শিরোপা।
ক্লপ ও লিভারপুলের খেলোয়াড়রা শিরোপা উদযাপন করেছেন হোটেলে বসে। স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অনুভূতি জানাতে গিয়ে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি ক্লপ। তবে আবেগের স্রোতের মধ্যেও ক্লাবের কিংবদন্তিদের কথা মনে করেছেন এই নিখাদ ভদ্র লোক।
তাঁর কথাগুলো মনে শিহরণ জাগার মতো, “আমি অভিভূত, কখনই ভাবতে পারিনি, এটির অনুভূতি অন্যরকম। কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এটা অবিশ্বাস্য, যতটা সম্ভব ভেবেছিলাম, তার চেয়েও বেশি কিছু।”
“এই ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে পারা সত্যিই অবিশ্বাস্য। এটা কেনির (ডালগ্লিশ) জন্য, স্টিভির (স্টিভেন জেরার্ড) জন্য, এটা সবার জন্য।”
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে হয়তো লিভারপুলের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যেত অনেক আগেই। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তিন মাস খেলা বন্ধ থাকায় জেগেছিলো শঙ্কা! লীগ শুরু হয়ে সব অনিশ্চয়তা কাটিয়ে শিরোপা নিশ্চিত হওয়ায় লিভারপুল কোচ স্বস্তির শ্বাস ফেলেন- “এটা স্বস্তির, কারণ তিন মাসের বিরতির পর কেউ জানত না মৌসুম কীভাবে ফিরবে। এটা (শিরোপা) সব সমর্থকের জন্য। আশা করি, তারা এটা উদযাপন করবে। আমাদের হৃদয় ও মস্তিষ্ক দিয়ে আমরা সবকিছুই করি একসঙ্গে। সমর্থকদের জন্য এমন কিছু করতে পারা দারুণ আনন্দের।”
আরও পড়ুন: জিতলো চেলসি হারলো সিটি; ৩০ বছর পর প্রিমিয়ারলীগ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
কোন জার্মান হিসেবে প্রথম কোন ম্যানেজার যে কিনা ইংলিশ প্রিমিয়ারলীগের শিরোপা জিতলো। ইতিহাস রচনা করা এই জেন্টলম্যান আবেগের অনুভূতি প্রকাশের প্রতিটি মুহুর্তে তাঁর মোটা ফ্রেমের চশমার ফাঁকে ঝরিয়ে পড়েছে অশ্রুকণা। এই কণাগুলোই ৩০ বছরের আক্ষেপের নিক্ষেপিত মণিমাণিক্য! এ মুক্তোর চেয়েও দামী।