বাঙ্গালী ভোজনরসিক বলে বড্ড সুখ্যাতি রয়েছে। আর ভোজনে বিভিন্ন মশলার ব্যবহার খাবারে এনে দেয় বাড়তি স্বাদ ও আনন্দ, তেমনই এক মশলা ‘আদা’। আদা ব্যবহৃত হয়না এমন কোন খাবার খুঁজে পাওয়া ভার! কেবল রসনা তৃপ্তিতেই আদা কাজে লাগে এমন নয়, বহু গুণে গুণান্বিত এই উপাদানটি। চলুন জেনে নেই কিভাবে আদা ব্যবহার করে এই করোনাকালীন শীতে নিজেকে সুস্থ, সুন্দর ও ভালো রাখবেন।
- হজমে সহায়তাঃ
আদা পেটফাঁপা ভাব দূর করতে এবং হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে থাকে। সকালে খালি পেটে এক চামচ আদার রস খেলে তা সারাদিন তাজা ও চনমনে অনুভূতি দেয়, সাথে একটু মধু মিশিয়ে নেয়া যায়।
– (২-৩) স্লাইস আদা একটু থেতো করে দেড় কাপ পানিতে ফুটিয়ে এক কাপ পরিমাণ করে হাল্কা ঠাণ্ডা অবস্থায় পান করতে হবে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণেঃ
ওজন নিয়ন্ত্রণে স্বাভাবিক হজম প্রক্রিয়া অনেক গুরুত্ববহ এবং সঠিক হজম প্রক্রিয়া সঠিক ওজনে সাহায্য করে। দুপুরে ও রাতে খাবার খাওয়ার ৩০-৪০মিনিট পরে আদা দিয়ে ফুটন্ত পানিতে গ্রিন-টি মিশিয়ে পান করলে তা সেই খাবার পরিপাকে ও চর্বি গলাতে সাহায্য করে। এছাড়া বিকেলের দিকে হালকা স্বাস্থ্যকর নাস্তা শেষে ফ্রেশ ‘কাম্বারজিন্ট’ জুস পান করতে হবে।
কাম্বারমিন্ট জুস করতে যা লাগবেঃ
– একটি শসা
– ৩স্লাইস করে কাটা আদা
– একমুঠ পুদিনাপাতা
– সবকিছু একত্রে ব্লেন্ডারে দিয়ে জুস করে এক চিমটি হিমালয়া পিংক সল্ট/রক সল্ট দিয়ে মিশিয়ে পান করতে হবে। জুসটি ছেঁকে খাওয়া যাবেনা। কারণ, ছেঁকে পান করলে জুসের ফাইবার ঠিকমতো কাজ করবেনা।
- খুশকি রোধেঃ
শীতকালে মাথার চালু শুষ্ক হয়ে মরা চামড়া জমে সাদা হয়ে থাকে যা আমরা খুশকি হিসেবে চিনি। খুশকি স্কিনে কোনভাবে পড়লে সেখানে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে। আদায় থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, স্কাল্পে সংক্রমণের মাত্রা কমিয়ে খুশকি তাড়াতে দারুন কাজে দেয়।
– এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ/নারিকেল তেলের সাথে ২চা-চামচ আদা ও আমলকীর রস মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে ২ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। এভাবে ৩মাস সপ্তাহে ২দিন করে করলে খুশকি যাওয়ার পাশাপাশি চুল পড়া কমবে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো হইবে।
- স্কিন ক্লিয়ার করতেঃ
স্কিনকে ব্রণের হাত থাকে মুক্ত করতে ও এন্টি এজিং এ সহায়তা করতে আদা প্রয়োজন পড়ে। বিভিন্ন স্কিন প্যাক বানানোর সময় ২-৩ ফোঁটা আদার রস যুক্ত করলেই হয়ে যাবে কাজ। তবে আদা স্যুট করে কিনা তা আগে যাচাই করে নিতে হবে।
- ঠাণ্ডা-জ্বরে আদাঃ
ভাইরাস জ্বর ও ঠাণ্ডা লাগা প্রতিরোধে আদা বিশেষ ভূমিকা রাখে। আদার রস একটু গরম করে সমপরিমান মধুর সাথে মিশিয়ে দিনে কয়েকবার খেলে ঠাণ্ডা লাগা ও ভাইরাস জ্বর সেরে যায়।
- বমিভাব দূর করেঃ
বমি বমি ভাব দূর করতে আদার ভূমিকা অপরিহার্য। বমি ভাব হলে কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন। এটি তাৎক্ষণিক উপকার মেলে। আর এতে মুখের স্বাদও বাড়ে।
- গলাব্যাথা সারাতেঃ
আদা-গোলমরিচ দিয়ে বানানো চা গলাব্যাথা সারাতে এবং স্বর ঠিক রাখতে অনেক ভালো কাজ করে।
আদা উষ্ণ প্রকৃতির মশলা, যা এই শীতে আপনাকে দেবে প্রশান্তি ও আরাম। পান করুন আদা চা বা জুস আর নিজের খেয়াল রাখুন, ভালো থাকুন-সুস্থ থাকুন।