লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামের রবিউল ইসলাম বসুনিয়া। পারিবারিক অভাব-অনাটনের কারণে দাখিল (এসএসসি) পরীক্ষা দিতে পারেননি তিনি। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চাকরি করলেও বাড়ি ছেড়ে থাকতে ভালো লাগে না তার।
এ কারণে ২০০৭ সালে বাড়ি এসে মুরগির খামার শুরু করেন। নানা সমস্যায় আর আর্থিক সংকটের কারণে ২০১১ সালেই বন্ধ হয়ে যায় খামারটি। পরে ২০১৬ সালে আবারও জমি ভাড়া নিয়ে গড়ে তুলেন ‘বসুনিয়া এগ্রো খামারবাড়ি’ নামে একটি মুরগির খামার। ওই খামার থেকে এখন প্রতিদিন ১৫শ ডিম উৎপাদন হয়। তবে তাতেও লাভের দেখা পায়নি রবিউল।
রবিউলের মতে, খামারটি ছোট হলেও কিছু নিয়মিত ব্যয় আছে, যা প্রতিদিনই বহন করতে হয়। খামার বড় হলেও ওই ব্যয়গুলো তেমন বৃদ্ধি পায় না। তাই খামার বড় করা হলে বাড়বে ডিম উৎপাদন। একই সঙ্গে খামার বাড়লে একদিকে যেমন লাভের মুখ দেখা যাবে তেমনি অন্যদিকে বেশ কয়েকজন শ্রমিকের কর্মসংস্থানও হবে। রবিউল ইসলাম তার প্রতিষ্ঠিত ‘বসুনিয়া এগ্রো খামারবাড়ি’ আরও বড় করার পরিকল্পনা নিলেও আর্থিক সংকটের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।
রবিউল ইসলাম বলেন, ‘অন্যের জমি মাসিক ভাড়া নিয়ে খামারটি গড়ে তুলেছি। তাতে আয়-ব্যয় সমান। বর্তমানে খামারে সাড়ে ৬ হাজার মুরগি রয়েছে। খামারটি বড় পরিসরে গড়ে তোলা গেলে একদিকে যেমন ডিম উৎপাদন হবে অন্যদিকে এলাকার পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আমিও লাভবান হব।’
তিনি জানান, ইতোমধ্যেই খামারটি আরও বড় করার পরিকল্পনা নিলেও আর্থিক সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন ব্যাংকে ঋণের জন্য গেলে তারা জমির দলিল চায়। কিন্তু তার জমি নেই। আর দলিল না থাকার কারণে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার পথ খুঁজছেন তিনি।
এই খামারের শ্রমিক মালেক ও সহিদার রহমান বলেন, খামারের মালিক শুন্য থেকে খামারটি শুরু করেছেন। আমরা দুইজন শুরু থেকে এই খামারে কাজ করি। তিনি পরিশ্রমী মানুষ। খামারটি বড় পরিসরে চালু করতে তিনি যদি ঋণ সহায়তা পান তাহলে একদিকে ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে আমাদের মতো মানুষদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে।
এ ব্যাপারে হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এনামুল হক বলেন, বসুনিয়া এগ্রো খামারবাড়িটি আমি নিয়মিত পরিদর্শন করি। আর্থিক সংকটের কারণে ওই খামার মালিক ব্যাপক পরিসরে খামারটি চালু করতে পারছেন না। তাকে যদি ঋণ সহায়তা দেওয়া যায় তাহলে ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে।