ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে বাগেরহাটে চার হাজার ৬৮৬টি কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। মাঠে থাকা সবজি, আমনের বীজতলা, পাকা ধানসহ ১৭শো হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
এতে কৃষকদের সাড়ে ৬ কোটি ৪০ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিধ্বস্ত ঘরগুলোর মধ্যে চার হাজার ৩৩৯টি ঘর আংশিক এবং ৩৪৭টি ঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী, নগদ টাকা ও টিন বিতরণ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
এছাড়া বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার বগী-গবতলা, দক্ষিণ সাউথখালী এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চার হাজার ৬৩৭টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে ২ কোটি ৯০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
শরণখোলার বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বগী, গাবতলা, চালিতাবুনিয়া, খুড়িয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার (২১ মে) দুপুরে জোয়ারের সময়ও বাঁধের ভাঙা অংশ নিয়ে নতুন করে পানি ঢুকেছে লোকালয়ে। এছাড়া জেলার সদর উপজেলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বগী-গাবতলা এলাকার অনেক পরিবার এখনও পানিবন্দি রয়েছে।
দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের জাহাঙ্গির হাওলাদার ও ফারুক মল্লিক বলেন, রাতে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করে লোকালয়ে। বাঁধের ভেতরে থাকা দোকান এবং এলাকার অনেকের ঘর ডুবে গেছে। কারও কারও ঘরের মাঝখানের মাটি পানির সঙ্গে ভেসে গেছে। অনেকর ঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে।
এর বাইরে বাগেরহাট সদরের ভৈরব ও দড়াটানা নদীর তীরের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৫টি স্থানে নদী-সংলগ্ন সড়ক ভেঙে জোয়ারের পানি ঢুকছে। এতে জোয়ারের সময় পানিবন্দি হয়ে পড়ছে কয়েক হাজার মানুষ। রান্নার জন্য চুলা জ্বালানোর মতো অবস্থাও নেই ওইসব এলাকায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান খান বলেন, বাগেরহাট জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩০০ মিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ এবং ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শরণখোলায় বলেশ্বর-তীরে বাঁধের সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত অংশে দ্রুত নতুন একটি রিং বাঁধ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অন্য বাঁধগুলোও দ্রুত সংস্কার করা হবে।
জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ বলেন, করোনার এই পরিস্থিতিতে আম্ফান-পরবর্তী সময়ে মোরেলগঞ্জ শরণখোলাসহ জেলার সব উপজেলায় ত্রাণ-কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৪০০ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা এবং ৫০টি পরিবারকে ঢেউটিন দেওয়া হয়েছে।