১৬ সেপ্টেম্বর ২য় তিস্তা সেতু তথা ‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু’ ২ বছর পূর্ণ হয়ে এখন তৃতীয় বছরে। সেতুটি নির্মিত হওয়ায় লালমনিরহাটের উন্নয়ন চিত্র পাল্টে যাবার পাশাপাশি এখন দাবি উঠেছে সেতুটিকে ঘিরে পর্যটন/ বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনেরও। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত এ সেতুটি উদ্বোধন করেন।
যোগাযোগ ব্যবস্থায় অধিকতর উন্নয়ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক রুট লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহর রংপুরের দূরত্ব কমিয়ে আনতে বৃহত্তর রংপুর-দিনাজপুর ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১২ সালে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর ও লক্ষীটারির মধ্যে দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ২০১৭ সালে তা শেষ হয়।
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্তাবধানে (এলজিইডি) ৮৫০ মিটার দীর্ঘ ও ফুটপাতসহ ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
সেতুর সংযোগ সড়কটি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের রুদ্রেশ্বর থেকে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের মহিপুর এলাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়ে যুক্ত হয়েছে। ফলে উত্তরাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জেলা লালমনিরহাটের যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তিস্তা নদীর উপর নির্মিত এ সেতুটি খুলে দিয়েছে সম্ভাবনার নতুন দ্বার।
পাশাপাশি অবস্থান সত্বেও লালমনিরহাট ও রংপুরের মধ্যকার যোগাযোগের অন্তরায় ছিল তিস্তা নদী। সেতু নির্মানের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ পুরো অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জীবনযাত্রার মানে বড়ই ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সেতুটি হওয়ার পর অল্প সময়েই রংপুর শহরের সঙ্গে লালমনিরহাটের আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার লোকজন যোগাযোগ করতে পারছে এবং এর সুফল পাচ্ছে রংপুরের পিছিয়ে থাকা গঙ্গাচড়া উপজেলার মানুষও। সেতুটি নির্মানের ফলে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরের সঙ্গে সড়কপথে বিভাগীয় শহর রংপুর ও ঢাকার দূরত্ব কমেছে প্রায় ৬০ কিলোমিটার। এদিকে সেতুটিকে ঘিরে সেখানে পর্যটন কেন্দ্র সহ হানিফ সংকেত পরিচালিত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ ইত্যাদি’ আয়োজনের দাবীও চলে আসছে অনেকদিন ধরে। এসব দাবি বাস্তবায়িত হলে সরকারের রাজস্ব লাভের পাশাপাশি জেলাটির উন্নয়নে আরো নতুন গতি সঞ্চারিত হবে বলেই বিশ্বাস সর্বসাধারনের।