বিদ্যুৎ সংযোগের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র

ছবি: মর্নিং নিউজ বিডি

কক্সবাজারের পেকুয়ায় নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার নামে চিহ্নিত প্রতারক চক্র দ্বারা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকা করিয়ারদিয়ায় বৈদ্যুতিক খুটি স্থাপন করা হয়েছে বছর দেড়েক আগে। এর মাস পাঁচেক পরেই বসানো হয়েছে ট্রান্সফরমার। এর মাঝেই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সদর ইউনিয়নের পশ্চিম গোঁয়াখালীর বকসি চৌকিদার পাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে মো. আজিম নেতৃত্ব একটি দালাল চক্র হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা।

করিয়ারদিয়া এলাকার বাসিন্দা রিদুয়ান কাদেরের ছেলে শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রায় এক বছর আগে আমার কাছ হতে আজিম মিটার দেওয়ার নামে ২৬০০ টাকা নেয়। পরে আমি জানতে পারি একটি মিটারের জন্য খরচ হয় মাত্র ৪৫০ টাকা।

একই এলাকার ছৈয়দুল হক সিকদারের ছেলে, চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী মামুন সিকদার বলেন, আমার জানামতে আজিম নামের ওই ব্যক্তি মোট ১৫৪ টি মিটারের জন্য ৪৩,৫৬০০/- (চার লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজার ছয়’শ টাকা) এই এলাকার মানুষ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। এর মাঝে ৭১ টি মিটারের জন্য প্রতিজন থেকে ২৮০০ (দুই হাজার আট’শ টাকা, ৪৮ টি মিটারের ক্ষেত্রে নেওয়া হয়েছে ২৬০০ (দুই হাজার ছয়’শ টাকা) আর বাকী ৩৫ টি মিটারের জন্য জন প্রতি ৩২০০ (তিন হাজার দুই’শ) টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারক চক্রের অন্যতম সদস্য আজিম।

করিয়ারদিয়া এলাকার বাসিন্দা, রাজনীতিবিদ জিয়াবুল হক জিকু বলেন, প্রধান মন্ত্রীর উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এ কর্মসূচীর আওতায় সারাদেশের ন্যায় পেকুয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে নতুন বিদ্যুৎ লাইন সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রান্তিক ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষকে বিদ্যুৎ সেবা পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে গেলেও স্থানীয় কিছু চিহ্নিত দালাল চক্র এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হত দরিদ্র পরিবারের নিকট হতে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত রয়েছে বিদ্যুৎ অফিসের লাইন সম্প্রসারণ কাজের ঠিকাদার, ফোর ম্যান ও স্থানীয় দালালচক্র।

সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে নানা অজুহাত দেখিয়ে ওই দালাল চক্র এ কাজটি করে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই রাজনীতিবিদ।

অভিযুক্ত আজিমের সাথে বারবার যোগাযোগ করা হলে সে এই বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে।

টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এসব প্রতারক চক্র হতে সাধারণ মানুষদের রক্ষা করতে প্রায় সময় আমরা মাইকিং করে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে যাচ্ছি। এরপরেও এসব দালাল চক্র দ্বারা টাকা হাতিয়ে নেওয়াটা হতাশাজনক।

এদিকে উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের ছৈয়দনগর এলাকার ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রী মো. রফিকও একইভাবে ১৪ টি মিটারের বিপরীতে ৭০, ০০০ (সত্তর হাজার) টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী। এতে প্রত্যক্ষভাবে পেকুয়া পল্লী বিদ্যুৎ সাব জোনাল অফিসের লাইন পরিদর্শক জাফরের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলেও জানায় ভুক্তভোগীরা।

এলাকাবাসীরা আরও জানায় লাইন পরিদর্শক জাফরের এসব অবৈধ লেনদেনের সর্বাত্মক সহযোগী হিসেবে কাজ করে মগনামার মোজাম্মেল ও সদর ইউনিয়নের মিজানুর রহমান।

পেকুয়া পল্লী বিদ্যুৎ সাব জোনাল অফিসের এজিএম শ্যামল কুমার মল্লিক বলেন, অভিযুক্তদের সাথে আমাদের অফিসের কোন সম্পৃক্ততা নেই। একটি মিটার স্থাপনে বিভিন্ন ট্যারিফ অনুযায়ী ৪৫০ থেকে ৮৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। এর বাইরে যদি কেউ অতিরিক্ত টাকা আদায় করে তা হবে অবৈধ লেনদেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *