বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। বুধবার সকালে যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে রমজান উপলক্ষে দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য সমাগ্রি বিতরণ করেন বিজিবি মহাপরিচালক। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন, বিজিবি খুলনা সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল রেজাউল কবির, যশোর-৪৯ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল আহমেদ হাসান জামিল প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয় তিনি তাদের অন্যতম।
যুবক নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৫৯-এর ১৪ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলস বা ইপিআর-এ যোগদান করেন। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই নূর মোহাম্মদকে দিনাজপুর থেকে যশোর সেক্টরে বদলি করা হয়। এরপর তিনি ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান। ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮নং সেক্টরে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগদান করেন। ১৯৭১-এর ৫ সেপ্টেম্বর সুতিপুরে নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যূহের সামনে যশোর জেলার গোয়ালহাটি গ্রামে নূর মোহাম্মদকে অধিনায়ক করে পাঁচ জনের সমন্বয়ে গঠিত একটি স্ট্যান্ডিং পেট্রোল পাঠানো হয়। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে হঠাৎ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পেট্রোলটি তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে গুলিবর্ষণ শুরু করে। একদিকে পাকিস্তানি সশস্ত্রবাহিনী, সঙ্গে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রশস্ত্র, অন্যদিকে মাত্র অর্ধমৃত সৈনিক (ই.পি.আর.) যাঁর সম্বল একটি রাইফেল ও সীমিত গুলি। এই অসম অবিশ্বাস্য যুদ্ধে তিনি শত্রুপক্ষের এমন ক্ষতিসাধন করেন যে তারা এই মৃত্যুপথযাত্রী বীর যোদ্ধাকে বেয়নেট চার্জ করে চোখ দুটো উপড়ে ফেলে এবং মস্তক বিদীর্ন করে ঘিলু ছড়িয়ে ফেলে। পরে প্রতিরক্ষার সৈনিকরা এসে পাশের একটি ঝাড় থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে।