বেঁদে বা যাযাবর! কেমন আছেন তাঁরা?

আমরা ছোটবেলা থেকেই গ্রাম বাংলায় দেখে এসেছি সাঁপুড়ের সাপ খেলা, ডুবুরীর সারা পুকুর অথবা দীঘিতে ডুব দিয়ে গৃহিণীর হারিয়ে যাওয়া স্বর্ণ খোঁজা, বেঁদে মহিলাদের বিভিন্ন বাঁত ব্যাথার, সাপে কাটার ভেষজ বা গাঁছড়া বিক্রি করা, এবাড়ি ওবাড়ি করে সারা গ্রাম ঘুরে বেড়াতে আরোও কত কি…..তাদের সাথে পিছু নিত তাদের বাচ্চা কাচ্চারা। কিন্তু কেমন আছেন তারা এখন? কোথায় থাকেন আর কিইবা করেন? যুগ বদলিয়েছে… এক সময় তাদের অভ্যুত্থান গড়ে উঠেছিল নদীকেন্দ্রীক হাজার হাজার বছর আগে। কিন্তু আজকের দিনে নদ-নদী যে আগের মত নেই! তারা আজ মৃত প্রায়! তাই জীবিকার তাগিদে তারা সম্প্রতি বছরগুলোতে নদী ছেড়ে অস্থায়ীভাবে ক্যাম্প করে ঘুরে ফিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে রুটি রুজির সন্ধানে। তেমনি বেঁদে ক্যাম্পে তাদের জীবন পর্যালোচনায় গমন করেন মর্ণিংনিউজ বিডি.কম টিম। স্থানঃ শার্শা উপজেলার, নাভারন এলাকা, যশোর। সেখানে আমরা সাক্ষাত করি প্রায় ২৫ টি পরিবারের সাথে যাদের মোট সদস্য শিশু, বৃদ্ধ, যুবক সহ প্রায় ১২০ জন। সেখানে বেঁদে সর্দার মোঃ কাঙালের সাথে আমরা আলোচনা করে জানতে পারি তাদের বর্তমান করুন অবস্থা। তাদের জন্মস্থান মূলত নাপিতভিটা, কাজির পাগলা, লৌহজং, মুন্সীগন্জ। মোঃ কাঙালের পিতা: আনসার আলী, মাতা: ঘিউরী। এন.আই.ডি. ৫৫১ ৩৪৮ ৯১৪৫। তবে কেন তারা এত দূরে এসেছেন? সেখানে আমরা কথা বলি আরোও কিছু বেঁদে পুরুষ ও মহিলাদের সাথে। জানতে পারি তারা আজও পুরানো সেই সকল পেশার সাথেই জড়িত আছেন। সরকার তাদের নাগরিকত্ব প্রদান করেছেন। তারা এতে খুশি। তারা এখন চাই বাপ-দাদার পুরানো পেশা বাদ দিয়ে গার্মেন্টস বা ছোটখাটো কোন পেশায় নিজেদের নিযুক্ত করতে। মোঃ কাঙাল ও তার সহযোদ্ধারা (জীবন সংগ্রামে) আরোও জানান, “এখন আর আমাদের আগের মত কাজ নাই, পোলাপান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে খুব কষ্টে আছি, ওদের লেখা-পড়াও নাই, তবে আমাদের অনেকের ঢাকায় ভাল অবস্থা, অনেকে অপকর্ম ও রাজনীতির সাথে জড়িয়ে নিজেদেরকে উন্নতি করেছে, আর আমাদের অনেকে আছে যারা অন্য কাজ করতে পারে না। “তাদের একটাই দাবিদাবা যদি সরকার এবং সুশীল সমাজ তাদের দিকে একটু অগ্রসর হয়ে কোন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। এবং এই অবেলায় কোন সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তবে তারা মানুষ হিসেবে সমাজে আরোও কিছুকাল অস্থায়ী ক্যাম্প না করে স্থায়ী কোন আবাস স্থানে বাস করতে পারত।

 

মর্নিংনিউজ/আই/এএস

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *