বেনাপোল কাস্টমসে এনজিওকর্মী মুনসুর কয়েক বছরে কোটি টাকার মালিক

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের এনজিওর কাজ করে মাত্র কয়েক বছরে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে এনজিও কর্মী মুনছুর। নিজ জন্মস্থান ঝিকরগাছার সরশকাঠিতে কিনেছেন নামে বেনামে জমি, মাছের ঘেরসহ করেছেন বিলাসবহুল বাড়ী। বর্তমান বেনাপোল পৌরসভার ছোটআঁচড়ায় বাড়ীসহ নামে বেনামে কিনেছেন একাধিক জমি। বেনাপোল কাস্টমসে নিয়োজিত কাঁচামাল মাঠে পরীক্ষন গ্রুপে এ কাজ করেন এনজিও কর্মী মুনছুর।

অনুসন্ধানে তার সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বেনাপোল স্থল বন্দরের দ্রুত পচনশীল পণ্য কাঁচামাল আমদানি পরীক্ষণ গ্রুপের ৩১নং ইয়ার্ডে কর্মরত সেটেলমেন্ট কিং খ্যাত এনজিও কর্মী মুনসুর কয়েক বছর কাজ করে বনে গেছে কোটি কোটি টাকার মালিক। বিশাল বাড়ি ফ্লাট সহ কিনেছেন নামে বেনামে জমি। যেখানে কাস্টমসে নেই তার কোন বেতন এবং বৈধ পরিচয়। সংশ্লিষ্ট শুল্ক বিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা নিজের পকেট ভারী করতেই এসব এনজিও কর্মী রেখেছেন রফদফা এবং অর্থ কালেকশন করার জন্য।

গোপন সূত্রে জানা গেছে, মুনছুরের রফাদফার পর সকল টাকা বহন করে ছোটআঁচড়া গ্রামের নাজিবুর রহমান(শুভ) নামের আর এক এনজিও। বর্তমান কাস্টমসের এই কাঁচামালের ৩১নং পরীক্ষণ গ্রুপে ফাইল নিয়ে গেলেই পড়তে হচ্ছে নানা বিড়াম্বনায়। “এনজিও কর্মী মুনছুরের অধিপত্যে অতিষ্ঠ সিএন্ডএফ কর্মচারীরা” বলতে গেলে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে ফেলছেন সে। কোন কারন ছাড়াই অতিরিক্ত অর্থ দাবির ফলে এই বন্দরে কাজ ছেড়ে দিচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ী।

একাধিক সিএন্ডএফ কর্মকর্তা জানিয়েছেন ৩১নং কাঁচামাল পরীক্ষন গ্রুপে আরও ও এআরওর নামে ফাইল প্রতি ১৫হাজার থেকে ৩০হাজার টাকা দিলে সই হয় সাধারন ফাইল। আর মোটা রাজস্ব ফাঁকি দিতে বিশেষ টিআর সুবিধা দিয়ে ফাইল ছেড়ে মোটা অংকের টাকা ঘুষ বাণিজ্যের মূল কারিগর এনজিও মুনছুর। এসব ঘুষ বানিজ্যের ফলে সাধারন আমদানিকারকদের প্রতিটি ফাইলের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এই বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অনেক আমাদানিকারক। ফলে কাঙ্খিত রাজস্ব আদায়ে ব্যার্থ হচ্ছে এই বন্দর।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের এক উর্দ্ধতন নেতা জানিয়েছেন, কাস্টমসে কর্মরত বহিরাগত এনজিও কর্মীরা কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ভাবে ভুল তথ্য দিয়ে আমাদের হয়রানি সহ বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করে আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে যাচ্ছে। এ সকল বহিরাগত এনজিও কর্মীদের বেনাপোল কাস্টমস থেকে অপসারণ করলে কাজের গতি বৃদ্ধিসহ রাজস্ব আদায় বহুল অংশে বৃদ্ধি পাবে। আমরা দেশের স্বার্থে কাস্টমস হাউস থেকে অবৈধ এসব এনজিও কর্মী দ্রুত অপসারন করতে অনুরোধ জানাচ্ছি। এছাড়া গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে এসব এনজিও কর্মীদের আটক করে তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে ওই সকল সিন্ডিকেট সদস্য ও কতিপয় কাস্টমস কর্মকর্তাদের অবৈধ আয়ের পরিমান।

এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরীর মুঠোফোনে কল দিয়ে এনজিও মুনছুর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এই নামে কাউকে চিনতে পারছিনা তবে সেখানে অনেক গুলো সংস্থা কাজ করে। আমি খোঁজ নিয়ে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *