রংপুরে অজানা হিংস্র প্রাণীর আক্রমণে গ্রামে গ্রামে আতঙ্ক, আঘাতগ্রস্থ অনেকেই

রংপুর অজ্ঞাত এক হিংস্র প্রাণির আক্রমণে আতংক বিদ্যমান কয়েকটি গ্রাম। দিন দুপুরেও বাড়ি থেকে বের হচ্ছেনা কেউ কেউ।শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাতেও শঙ্কা করছেন অভিভাবকরা। নগরীর ১৪নং ওয়ার্ডের মনোহরপুর সিংগিমারি গ্রামে ইদানিং হিংস্র প্রাণির উৎপত্তি হয়েছে বলে একাবাসী জানিয়েছে। গত ৮আগষ্ট প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য সড়কের সাইডে নামেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৪নং ওয়ার্ডের মনোহরপুর সিংগিমারি গ্রামের ট্রাক্টর চালক রাহেদুল মিয়া সেখানেই তাকে আক্রমণ করে অজ্ঞাত প্রাণি।এসময় মুখে ও পেটে আচড় কেটে তাকে আঘাতগ্রস্থ করে।পরে মেডিকেলে সেবা নেন আক্রান্ত সেই ট্রাক্টর চালক।

রাহেদুল মিয়া জানান, রাস্তা হতে কিছু দূরে প্রাকৃতিক কাজ সারতে নামি।সেময় ধানক্ষেত হতে প্রাণিটি এসে আমাকে কামড় দেয়া।তাকে জলাশয়ে ফেলে দিলে উঠে এসে সে আবার আমাকে থাবা দিয়ে ক্ষত করে। তিনি আরো জানান,প্রাণিটির ওজন প্রায় ৩০হতে ৪০কেজি হবে।গায়ের পশম সাদা। আর কাধে পশম আছে। তিনি আরো বলেন, আমাকে আক্রমণ করেছে আর কাউকে করবেনা এইরকম কোন কথা নেই।সরকারের এবিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া দরকার।

আক্রমণের স্বীকার আসাদুল মিয়া বলেন,ধানক্ষেতে কিটনাশক ছিটাতে গেছিলাম (১৩অক্টোবর) আচমকা দেখি সম্মুখে ওই প্রাণিটা তেড়ে আসছে।কীটনাশক এর বোতল ফেলে শঙ্কায় পালিয়ে এসেছি।

হিংস্র প্রাণির নিকট আঘাতগ্রস্থ হওয়া বৃদ্ধা হানিফা বেগম(৬০) বলেন, ভাত খেয়ে রাত্রিতে বের হইসি সেময় আচমকা কই হতে যেন প্রাণির এসে বুকে কামড় দেওয়ার জন্য ধরছিলো।অনেক চেষ্টা করেও ছাড়াতে পারছিলাম না। পরে চুলের মধ্যে তার ধারলো দাত আটকে যায়, এসময় আমার কাধে কামড় দেবার জন্য সে চেষ্টা করছিলো। পাথর দিয়ে মারার পর পালিয়ে যায়।

আক্রমণের আতাউর(৩২) বলেন, ছেলেকে দোকানে পাঠিয়ে পথে দাড়িয়ে ছিলাম সে টাইম আমার হাতে এসে কামড় দিয়েছে।আমরা অনেক আতংকে আছি।সরকার কোন পদক্ষেপ না নিলে আমাদের বিপদ হতে পারে। ভয়ে বাচ্চাগুলোকে বিদ্যালয়ে পাঠাতে পারছি না।

প্রত্যক্ষদর্শী লিয়ন জানায়, প্রাণিটির কাধে পশম আছে দেখতে সাদা ।আমার দাদি হানিফা বেগমকে আক্রমণের টাইম আমি এগিয়ে আসি। প্রাণিটি দেখতে প্রচুর ভয়ংকর এইরকম প্রাণি আমি আগে কোনো সময়েই দেখনি।

একই গ্রামের মাসুদ পারভেজ মিম বলেন, অনেক আতংকে আছি। কি করবো বুঝতে পারছি না।এটার সমাধান করার জন্য সরকার ও বন বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

গ্রামবাসী জেসমিন নাহার রিনা বলেন, রাতে বের হতে পারিনা। এর কি কোন প্রতিকার নাই।প্রধানমন্ত্রীর নিকট আরজি আমাদের এই বিপদের হাত হতে বাঁচান।

আক্রান্ত গ্রামের মহিলা মেহেরা খাতুন বলেন,লাঠি নিয়ে ঘুরতেছি। বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে পাঠাইতে পারতেছি না।কি করবো আমরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ফেন্সি বেগম বলেন, চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে দেখি ছেলেটার হাতে কামড় দিছে।টয়লেট বাহিরে হওয়ায় প্রসাব পায়খানা করার জন্য যেতেও শঙ্কা লাগে।রাতে জেগে থাকি লাঠি হাতে নিয়ে।

এই খবর লেখা পর্যন্ত প্রাণিটি আরো কয়েকজনকে আক্রমন করার চেষ্টা করেছে বলে গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে । লাঠি-সোটা নিয়ে গ্রামের সকলেই ইদানিং প্রাণিটিকে খুজছে।রাতে কারোর ওপর আক্রমণ হতে পারে বলেও শংকা করছেন তারা। অতি দ্রুত এই সমস্যা হতে মুক্তি চায় গ্রামের জনসাধারণ।

 

মর্নিংনিউজ/বিআই/এসইউ

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *