রংপুরে গাছে গাছে আমের মুকুল, স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন চাষিরা

মুকুলে ছেয়ে যাওয়া হাঁড়িভাঙা আমগাছগুলো আলাদা শোভা ছড়াচ্ছে। সবুজ পাতার কিনার ছাঁপিয়ে ওঠা মুকুলের সোনালি রেণু যেন ফুলশয্যা সাজিয়ে স্বাগত জানিয়েছে বসন্তকে।বাতাসে ভাসছে মিষ্টি ঘ্রাণ। প্রকৃতিও অনুকূলে রয়েছে । এবারে প্রচুর মুকুল ধরেছে হাঁড়িভাঙা আমের গাছে। আমের মুকুলের রক্তাধিক্য দেখে বাম্পার ফলন আশা করছেন বাগানমালিক ও চাষিরা। রংপুরের পালিচড়া, মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ, বালুয়া মাসিমপুর, বদরগঞ্জের শ্যামপুর সহ বিভিন্ন এলাকা হাঁড়িভাঙা আমের জন্য খ্যাতি পেয়েছে অনেক আগেই। জেলার এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আমবাগানগুলো হলুদে হলুদে ছেয়ে গেছে। বসন্তের বাতাসে আমগাছে দোল খাচ্ছে মুকুল গুলো। আম ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। সবার’ই মুখে খুশির ছাপ।

এদিকে জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় এ বছর হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাহিদা ও দাম দুটোই বাড়বে বলে আশা বাগান মালিকদের।

জানা গেছে, জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় হাঁড়িভাঙ্গা আম এখন রংপুরের ব্র্যান্ড। দীর্ঘ সাত বছরের চেষ্টায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে হাঁড়িভাঙ্গা আমকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে জার্নাল প্রকাশ করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর।

আম চাষিরা বলছেন, নিয়মিত পরিচর্যা করলে হাঁড়িভাঙা আমের আশানুরূপ ফলন পাওয়া সম্ভব। হাঁড়িভাঙা আমের গাছের স্বর্ণালি মুকুলের ডালপালা জুড়েই এখন আম চাষিদের স্বপ্ন। রংপুরের সুমিষ্ট আঁশবিহীন হাঁড়িভাঙা আমের চাহিদাও বাড়ছে দিন দিন। কয়েক বছর ধরে ফলন ভালো হওয়ায় জেলা জুড়ে বেড়ে চলেছে এই আম উৎপাদনের পরিমাণও।

মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের আমচাষি ও আমব্যবসায়ী মোঃ শাহিন মিয়া প্রায় ৫ একর জমির আমবাগান লিজ নিয়েছেন। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া খুব ভালোই কাটছে । পোকামাকড় যেন গাছে ভিড়তে না পারে, এ জন্য ওষুধ ছিটানো হয়েছে। পরিশেষে, যদি আবহাওয়া ভালো থাকে, তাহলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন আশা করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর কার্যালয় সূত্র জানায়, রংপুরে এবার প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙার চাষ হয়েছে ১ হাজার ৯২৫ হেক্টরে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ২০-২২ মেট্রিক টন হওয়ার আশাবাদ কৃষি বিভাগের। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমগাছের পরিচর্যা করার জন্য চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *