রংপুরে বিদ্যালয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অচলাবস্থা, মিলছে না স্বাস্থ্যসেবা

বিভাগীয় নগর রংপুরের একমাত্র বিদ্যালয় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের চরম অচলাবস্থা। বেশিরভাগ টাইমে দেখা মেলে না কোনো রোগীর। দূর হতে দেখলে মনে হবে কোনো ভবন। চিকিৎসাসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে ১ম হতে দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা টাকায় চিকিৎসাসেবা ও ফ্রি দেওয়ার জন্য রংপুর মহানগরীর কাচারি বাজার জিরো পয়েন্টের চারশ মিটার পূর্বদিকে প্রায় ৩৭শতক ভূমির উপর ১৯৭৩সালে সরকারিভাবে বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নির্মিত হয়। সারা দেশে বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে ২৩টি। রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার ভিতরে তিনটি জেলায় আছে বিদ্যালয় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। এর ভিতরে রংপুর জেলায় একটি বিদ্যালয় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে।

এখানে কাগজেকলমে চিকিৎসার আয়োজন থাকলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থী জানে না এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সেবার কথা। শিক্ষকদেরও ক্লিয়ার ধারণা নেই। বিধান অনুসারে এসব কেন্দ্রের চিকিৎসকরা শিক্ষার্থীদের প্রাইমারি সেবা দেবেন। প্রতি সপ্তাহে বিদ্যালয়ে গিয়ে স্বাস্থ্য ব্যপারে পরামর্শ দেবেন ছাত্রছাত্রীদের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরীর বিদ্যালয়গুলোতে প্রচার-প্রচারণা ও সঠিক পরিদর্শন না থাকায় প্রায় ৯০শতাংশ ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা জানেন না বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও তার পরিসেবা সম্পর্কে। রংপুর বিদ্যালয় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের কার্যক্রম নীতি অনুসারে ২জন মেডিকেল কর্মকর্তা একজন ফার্মাসিস্ট তার সাথে একজন দফতর সহায়ক দিয়ে চলত। প্রায় এক বছর হতে একজন মেডিকেল অফিসার, একজন ফার্মাসিস্ট এবং একজন অফিস সহায়ক দিয়ে কাজ চলছে বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির। নেই কোনো নাইট গার্ড, নেই কোনো সুইপার। নিরাপত্তাহীন আর জনবল সংকট নিয়ে চলছে বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মাসের মধ্যে রংপুর মহানগরীর ৮টি হতে ১০টি বিদ্যালয় পরিদর্শন করার কথা থাকলেও পরিদর্শন করা হয় ২হতে ৩টি বিদ্যালয়। গত আগস্ট মাসের মধ্যে নগরীর ২টি বিদ্যালয় পরিভ্রমণ করা হয়। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পরিভ্রমণ করা হয় ২টি বিদ্যালয়। ডেইলি ৮থেকে ১০জন ছাত্র আসে চিকিৎসাসেবা নিতে। বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৩০ধরণের নানারকম রোগের ঔষধ  সরবরাহ আছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেট এসেছিল ১-১২-২০২২ তারিখে ২লাখ ২৭হাজার ৯৪৪টাকা এবং ১৯-১২-২০২২ তারিখে ১লাখ ২৯হাজার ৫০টাকার।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুবহানা নূরী বলেন, বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র আমি কোনোদিন নামই শুনিনি। মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সখিনা বেগম বলেন, ১ম হতে দশম শ্রেণির প্রত্যেকটি স্কুলের ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য এই বিদ্যালয় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এইখানে বিনামূলে চিকিৎসা এবং ঔষধ দেওয়া হয়। এইখানে বিভিন্ন রোগের ৩০প্রকার সরবরাহ আছে। একার পক্ষে নিজ খরচে বিদ্যালয়গুলো সঠিকভাবে পরিদর্শন পসিবল হয় না। এ ব্যতীত নানারকম ইভেন্টে মেডিকেল টিমেও কাজ করতে হয়।

ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, বিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি অনেক পুরোনো। লোকবল কম থাকায় ঠিকভাবে বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করা পসিবল হয় না। আবার বিদ্যালয় মেডিকেল কর্মকর্তাকে নানারকম মেডিকেল টিমে অংশ নিতে হয়। প্রতিটি স্কুল যাতে ঠিকভাবে পরিদর্শন হয় সে বিষয়ে আমরা আরও প্রচেষ্টা গ্রহণ করব। বিপুল প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে প্রত্যেকটি স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে সচেতন করে সরকারের এই স্কুল স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমকে আধুনিকায়ন করা হোক এমনটাই প্রত্যাশা অভিভাবকদের।

 

মর্নিংনিউজ/বিআই/এসইউ

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *