লকডাউনের জন্য বেঁচে গেছে লক্ষ প্রাণ

শিপন নাথ: কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়া রোধে জারি করা ‘লকডাউন’ বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে। যা বর্তমান পরিস্থিতিতে মানবজীবনে আশির্বাদস্বরুপ। মূলত এর প্রভাবেই গৃহবন্দী অবস্থায় দিন যাপন করলেও বাইরে গিয়ে ভাইরাসে সংক্রমণ হয়ে প্রাণ সংশয় হচ্ছে না।

লকডাউনের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশই নতুন কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা কমায় বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু করেছে। যার প্রভাব পরেছে বাংলাদেশেও। লকডাউন শিথীল করার পাশাপাশি যত্র তত্র বেড়েছে মানুষের অবাধ বিচরণও।

মূলত মে মাসের শুরুর দিকে সংক্রমণ বাড়ার হার কমাতে সহায়তা করে এই লকডাউন। কিন্তু বর্তমানে তা শিথীল করলেও ঝুঁকি শেষ হয়ে যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী,  অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ব্রিটেন, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ডের ১ কোটি ২০ লাখ থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে যা দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ। গবেষণার মডেল অনুয়ায়ী লকডাউন থাকায় প্রায় ৩১ লাখ মৃত্যু এড়ানো গেছে।

তাছাড়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, ইরান, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রে লকডাউন জারির ফলে ৫৩ কোটি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া থেকে বেঁচেছে। গবেষকরা বলছেন, লকডাউন ব্যবস্থা জারির আগে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সংক্রমণ ইরানে দিনে ৬৮ শতাংশ হারে এবং অন্য পাঁচটি দেশে ৩৮ শতাংশ হারে বেড়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাটি যৌথভাবে নেতৃত্ব দেওয়া সলোমন সিয়াং বলেন, ওই নীতিমালাগুলো ছাড়া আমরা হয়তো পুরোপুরি ভিন্ন একটা এপ্রিল ও মে মাস দেখতাম। সেই তুলনায় পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। লকডাউনের কারণে এতদিন পরিস্থিতি অনেকাংশেই স্বাভাবিক ছিল। করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ছিল আয়ত্তের মধ্যে। কিন্তু বর্তমানে লকডাউন শিথীল করে সীমিত পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিহীত সকল প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়েছে। কিন্তু তেমন কোথাও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব কিংবা মুখে মাস্ক, গ্লাভস ব্যবহার করার পদ্ধতি। এতে বাড়ছে ঝুঁকি। বাড়ছে সংক্রমণ। আবার বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।

লকডাউনের কারণে সংক্রমণ হবার পরিস্থিতি যেমন আয়ত্তে ছিল, ঠিক তেমনি আয়ত্তে ছিল মৃতের সংখ্যা। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে দিনশেষে সবকিছুর উর্ধ্বে একটি প্রশ্ন থেকেই যায় যে, মানুষ কবে সচেতন হবে?

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *