শিবচরে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

 

মাদারীপুর জেলার শিবচরে ভুল চিকিৎসায় পলি আক্তার(৩০) নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার(৮জানুয়ারী) দুপুর ১টার দিকে শিবচর পৌরসভার ৭১ সড়কের মা ও শিশু (প্রা:) হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। এসময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে রাত ৮টার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত পলি শিবচর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের খানকান্দি এলাকার লিটন শেখের স্ত্রী ও উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের খবির মোল্লার মেয়ে।

নিহতের পরিবার সুত্রে জানা যায়,গতকাল সকাল ৯টার দিকে পলিকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য শিবচর পৌরবাজারের একাত্তর সড়কের মা ও শিশু (প্রা:) হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আনা হয়।সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পলিকে ভর্তি করে রোগীর স্বজনদের ৫-৬ব্যাগ রক্ত ও প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবস্থা করতে বলে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী রক্ত ও ঔষধ ব্যবস্থা করেন তারা। দুপুর ১টার দিকে রোগীকে সিজারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তার ফাহমিদুল হাসান তনু নামে একজন চিকিৎসক সিজারিয়ান অপারেশন করেন। একটি ছেলে সন্তানের প্রসব করেন পলি। তবে অপারেশনের পরই প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে কর্তৃপক্ষ রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যান। সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫ব্যাগ রক্ত রোগীকে শরিরে দেওয়া হয়। তাতে কোন কাজ না হওয়ায় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রেরন করে। পরে সেখানে নেওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে রাত ১১টার দিকে শিবচরে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে ওই হাসপাতালের সামনে ও ভিতরে ববিক্ষোভ করেছেন স্বজনরা।প রে স্থানীয়দের বিচারের আশ্বাসে তারা ফিরে যান।

রোগীর শ্বাশুড়ি সাহেদা বেগম বলেন, আমার বৌমাকে তারা মেরে ফেলছে। কেন আগে বললোনা রোগীর অবস্থা খারাপ। আমার বউ বিএ পাশ।আল্লাহ আমাকে ফুটফুটে একটি নাতী দিয়েছেন। আমি ওদের বিচার চাই। ঘটনার তদন্ত করে এর বিচার চাই।

রোগীর ননদ শিউলি বলেন, আমার ভাইয়ের স্ত্রীকে সকালে হাসপাতালে আনি। তার ১০হাজার টাকা আমাদের সাথে সিজার করা বাবদ চুক্তি করেন।সিজারের পরে তারা বলে আমাদের কষ্ট বেশি হয়েছে আরো ৫হাজার টাকা দাবী করে। তখন আমরা বলছি রোগী সুস্থ হোক আমরা দিবো। তবে রোগীর যে অবস্থা খারাপ তারা এগুলো বলেনা।আমরা জিজ্ঞেস করি রোগী বেডে আনেন না কেন? ওরা বলে রোগী ভলো আছে।টেনশন কইরেন না।রক্ত ম্যানেজ করতে বলে তাও করছি। রক্ত ক্রশম্যাচিং করার জন্যও অনেক টাকা নিছে তাও দিছি। রাতে বলে রোগীর অবস্থা ভালো না, তাকে আপনারা ঢাকা নিয়ে যান। তখন দেখি আমার ভাবীর জ্ঞান ফেরেনি। পরে আমরা ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আমরা এদের বিচার চাই।

এবিষয়ে জানতে ডাক্তার ফাহমিদুল হাসান তনুকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

হাসপাতালে ব্যবস্থাপনা পরিচালক শারমিন আক্তার বলেন, কেন যে এমন হলো আমরা বলতে পারবো না। এই ডাক্তারতো আমাদের এখানে কলিং এ আসে। তার বাড়ি ফরিদপুর। নিয়মিত সিজার করেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের রিপোর্ট না করারও অনুরোধ করেন।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সুব্রত গোলদার মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, বিষয় আমি জানতে পেরেছি। তবে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *