সংক্রমণ রুখতে লকডাউন অত্যন্ত কার্যকর: চীনা বিশেষজ্ঞ টিম

ছবি: সংগৃহিত

চীনের সফররত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দল বাংলাদেশ কিভাবে আরো ভালভাবে কোভিড ১৯ মহামারী পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে তার ওপর এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের কাছে চারটি বিশেষ প্রতিবেদন পেশ করবে।দুই সপ্তাহের সফর শেষে আগামীকাল চীনা চিকিৎসক দলের বাংলাদেশ ত্যাগের কথা রয়েছে। তারা ইতোমধ্যেই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতের পর এক সপ্তাহের মধ্যেই তা চীনে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

রবিবার (২১ জুন) এক ভার্চুয়াল মতবিনিময় অনুষ্ঠানে চিকিৎসক দলের বিশেষজ্ঞরা ও ঢাকায় চীনা দূতাবাসের উপপ্রধান হুয়ালং ইয়ান এ তথ্য জানান।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চীনা মেডিক্যাল টিম ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন ও সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।সোমবার তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পিক টাইমে বাংলাদেশ পৌঁছেছে কিনা মতবিনিময় অনুষ্ঠানে জানতে চাওয়া হলে, চীনা দূতাবাসের উপপ্রধান হুয়ালং ইয়ান বলেন, এটি বলা খুবই কঠিন। তবে সংক্রমণ রূখতে লকডাউন অত্যন্ত কার্যকর এবং চীনে এটি খুব ভালো কাজ করেছে।

বাংলাদেশে লকডাউন করার সুপারিশ করা হবে কিনা জানতে চাইলে, তিনি বলেন, হ্যাঁ, এটি অত্যন্ত কার্যকর। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অবশ্যই পরিকল্পিত ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে লকডাউন করত হবে। তবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং পুনরায় শুরু করতে চিহ্নিত করতে হবে— কোন অঞ্চলে রোগটি বেশি। ফ্যাক্টরি চিহ্নিত করতে হবে, যেখানে এই রোগ ছড়াতে পারে।

র‌্যাপিড টেস্ট করা উচিত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হুয়ালং ইয়ান বলেন, আমরা এটি সুপারিশ করি না। সবচেয়ে ভালো হচ্ছে পিসিআর টেস্ট। র‌্যাপিড টেস্ট হচ্ছে এন্টিবডি টেস্ট এবং প্রথম সপ্তাহে রোগীর মধ্যে এন্টিবডি থাকে না।

প্লাজমা ট্রিটমেন্টের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, সব রোগীর ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যায় না। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা উচিত।

তিনি জানান, মাস্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য যে মাস্ক ব্যবহার করা হয়, সেটি ভিন্ন এবং অত্যন্ত উন্নতমানের। গ্লাভস ব্যবহারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত বলে মন্তব্য করে হুয়ালং ইয়ান বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা গ্লাভস ব্যবহার করেন, তারা অমনোযোগী হন এবং অনেক ক্ষেত্রে মুখে হাত দেন, যার মাধ্যমে দ্রুত রোগ ছড়ায়। বাংলাদেশে করোনার সচেতনতার বিষয়ে তিনি বলেন, চীনা মেডিক্যাল টিম এ বিষয়ে হতাশ।

করোনা ভাইরাস আগামী ২ থেকে ৩ বছর বাংলাদেশে থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। এটি নির্ণয় করার জন্য বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ দরকার।

তিনি জানান, চীনে পাচঁটি কোম্পানি ভ্যাকসিন তৈরি করছে। ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেলে বাংলাদেশ হবে প্রথম দেশগুলোর মধ্যে একটি, যারা ভ্যাকসিন পাবে। এই রোগকে ভয় পাওয়া থেকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি পরিদর্শন ও করোনা রোধে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে ১০ সদস্যের চীনা চিকিৎসক দলটি গত ৮ জুন ঢাকায় আসে। সোমবার তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। দুই সপ্তাহের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে এক সপ্তাহের মধ্যেই পরামর্শ আকারে বিশেষজ্ঞ রিপোর্ট হস্তান্তর করা হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *