লাদাখে ভারত-চীন সংঘর্ষ ঘিরে উত্তপ্ত দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি। এমন পরিস্থিতিতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা তৈরি হওয়ার জন্য চিনকেই দায়ী করলো তারা। তাদের বক্তব্য, পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে, ভূখণ্ডের দখল নিতে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-ই প্রথম সংঘর্ষে উস্কানি জোগায়।
বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেটের বিদেশনীতি সংক্রান্ত আলোচনায় ভারত-চীন সংঘাতের প্রসঙ্গ উঠে আসে। সেখানে চীনকে তুলোধুনা করেন মার্কিন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা মিচ ম্যাকনেল। তিনি বলেন, ১৯৬২-র যুদ্ধের পর স্থলভাগে এটাই দু-দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড়ো সংঘর্ষ। বোঝা যাচ্ছে, ভূখণ্ড দখল করতে চীনা বাহিনীই সংঘর্ষে উস্কানি জোগায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের বন্ধুদেশগুলোর ক্ষেত্রে চীন ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন ম্যাকনেল। তাঁর কথায়, ‘বলা বাহুল্য, দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে এই সংঘর্ষে গোটা বিশ্ব ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন। উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে যাতে শান্তি ফিরে আসে, সেই চেষ্টাই করছি আমরা। তবে নিজের দেশের সীমানার মধ্যেই চীন মানুষের ওপর কী নিদারুণ অত্যাচার চালাচ্ছে, আন্তর্জাতিক নিয়ম-শৃঙ্খলাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে নিজেদের ইচ্ছেমাফিক নিয়ম-নীতি তৈরি করে গোটা দুনিয়ার নকশা পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করছে, তা বোঝার জন্য এর চেয়ে ভালো ইঙ্গিত পেত না গোটা বিশ্ব।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রীয় সাইবার হামলার শিকার অস্ট্রেলিয়া
নোভেল করোনার জেরে উদ্ভূত মহামারি পরিস্থিতির জন্য আগেই চীনকে দুষেছে মার্কিন সরকার। এই মহামারিকে আড়াল করে তারা হংকংয়ে উৎপীড়ন চালাচ্ছে এবং সেখানে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করতে উদ্যত হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ম্যাককনেল। জলপথে জাপান এবং মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে একাধিকবার তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন নিয়েও চীনকে একহাত নেন তিনি।
সরাসরি ভারতের হয়ে মুখ খোলেন কংগ্রেস সদস্য জিম ব্যাঙ্কসও। লাদাখে সংঘর্ষের পর দিল্লির তরফে চীনা মোবাইল সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থা হুয়াওয়ে এবং জেডটিই-কে নিষিদ্ধ করার চিন্তাভাবনা চলছে। সেই চিন্তাভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন জিম ব্যাঙ্কস। তিনি বলেন, ‘চীনা গুন্ডাদের এভাবেই ধাক্কা দিতে হবে। ভারতকে ভয় দেখানো যাবে না। খুব ভালো সিদ্ধান্ত।’
আরও পড়ুন: ভারত-চীন সংঘাত : উত্তেজনা নিরসনে সমঝোতার আহ্বান জার্মানির
অন্য দিকে, চীনা আগ্রাসনের মুখে পড়ে লাদাখে যে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন, তার জন্য ভারতকে সমবেদনা জানিয়েছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘চীনের সঙ্গে সংঘর্ষে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছন, তাঁদের জন্য সমস্ত ভারতবাসীকে গভীর সমবেদনা জানাই। ওই জওয়ানদের পরিবার-পরিজনদের কথা মনে থাকবে আমাদের।’