করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিএনপি উত্থাপিত সাত দফা সুপারিশের কঠোর সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, করোনায় সৃষ্ট সংকট উত্তরণে সরকার বিএনপির সাত দফা সুপারিশের চেয়েও অনেক বেশি সুসমন্বিত পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রতিটি পর্যায় বিচার-বিশ্লেষণ করে সরকারের এসব পদক্ষেপ চলমান রয়েছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার নির্দিষ্ট কোনো দফায় সীমাবদ্ধ না থেকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে চলেছে।
রোববার এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলটির পক্ষ থেকে সাত দফা সুপারিশ উত্থাপনের নামে সরকারের বিরুদ্ধাচার করার যে অপচেষ্টা করেছেন, তার যৌক্তিক কোনো ভিত্তি নেই। বরং তা উস্কানিমূলক। তার মন্তব্য মিথ্যা ও বাস্তবতাবিবর্জিত।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দক্ষতায় করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই সরকার সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে কাজ করে চলেছে। সাধারণ ছুটির শুরু থেকে পেশাদার বেসামরিক প্রশাসনের পাশাপাশি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় এলাকাভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা করে সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ করোনা মোকাবিলার সম্মুখ যোদ্ধাদের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ উত্থাপন করতে পারেনি। এসব সম্মুখ যোদ্ধার পাশাপাশি বিএনপি নেতাদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্য সুরক্ষাসামগ্রীর প্রয়োজন পড়লে আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে তা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ও তার দল বিএনপি এই সংকটময় মূহুর্তে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে রাজনীতিতে যে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন- তা জাতীয় মেমোরিতে দীর্ঘদিন ক্ষতচিহ্ন বহন করবে। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে সমালোচনার নামে সরকারের সমালোচনাই বিএনপির একমাত্র অবলম্বন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
করোনা প্রতিরোধে সরকার গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি বাজেট বরাদ্দ ও বিভিন্ন প্যাকেজ ঘোষণার কথা তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিব প্রতিটি জেলায় করোনা শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাসেবা দ্রুত সম্প্রসারণের দাবি জানিয়েছেন। তার দাবি উত্থাপনের অনেক আগে থেকে সরকার সারাদেশে করোনা শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাসেবা সম্প্রসারণের কাজ করে চলেছে।
তিনি বলেন, সরকারি ত্রাণ ও অর্থ বিতরণে অনিয়মে জড়িত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে। দলীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ত্রাণ ও অর্থ বিতরণে অনিয়মে জড়িত বিএনপির জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে দলটির পক্ষে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: এক নজরে বাজেট ২০২০-২১
ওবায়দুল কাদের বলেন,‘ মির্জা ফখরুল সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের ইঙ্গিতপূর্ণ অভিযোগ উত্থাপনের চেষ্টা করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার কখনো তথ্য গোপনের রাজনীতি করে না। করোনাভাইরাসে সৃষ্ট সংকট একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এটি জাতীয় বা সরকারের গৃহীত নীতির ফলে উদ্ভূত কোনো সমস্যা নয়। সুতরাং এটা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য গোপনের কোনো প্রশ্নই আসে না। বরং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এই ভাইরাস প্রার্দুভাবের শুরু থেকে জনসচেতনতা তৈরিতে সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে সব তথ্য ও স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা জনগণের সামনে তুলে ধরা হয়। সবার সম্মিলিত প্রয়াস ও জনগণের সচেতনতার দুর্গই ছিল এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ের মূল অস্ত্র। পরম করুণাময় আমাদের সহায় হোন। জয় আমাদের হবেই, ইনশাল্লাহ।’