ভিনগ্রহবাসীদের নিয়ে রয়েছে বিস্তর জল্পনা-কল্পনা। শুধু সাধারন মানুষের মধ্যেই নয়, বিজ্ঞানী মহলেও এ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক কৌতুহল। এ কারণেই আকাশে অপরিচিত উড়ন্ত কোনো বস্তু বা ইউএফও (আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট) দেখলে মানুষ প্রথমেই ভেবে বসে, নিশ্চয়ই ভিনগ্রহবাসীর আগমন ঘটেছে।
গত মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী মার্কিন সামরিক বিমানের উপরে থাকা ক্যামেরাগুলি দ্বারা ২০০৪ এবং ২০১৫ সালের তিনটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। যেগুলোতে কিছু আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট বা ইউএফও’কে উড়তে দেখা গেছে। মানব তৈরি প্রযুক্তির সঙ্গে যেগুলোর কোন মিল নেই। পেন্টাগন প্রকাশিত ওই তিনটি ভিডিওতে মহাকাশে তিনটি ইউএফও উড়তে দেখা গেছে। ঝাপসা সেই ভিডিওতে দেখা গেছে, কিছু বস্তু মহাকাশে ভাসছে।
এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে মার্কিন সামরিক বাহিনী কর্তৃক প্রকাশিত এসব ফুটেজের অন্য রকম গুরুত্ব রয়েছে। এই ফুটেজগুলোর অর্থ হল ইউএফওকে পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে। হতে পারে এগুলোকে প্যারানরমাল বিভাগ থেকে সরিয়ে বৈজ্ঞানিক শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা। সম্প্রতি এই বিষয়ে ভক্সের সাংবাদিক শন ইলিং রাজনৈতিক বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ওয়েন্ডেটের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওয়েন্ডেট হলেন সামাজিক বিজ্ঞান এবং আন্তঃব্যক্তিক মিথস্ক্রিয়া বিষয়ক একাধিক নামি বইয়ের লেখক।
ইলিং ওয়েন্ডটকে প্রশ্ন করেন যে, আপনি বিশ্বে কোনো ইউএফও বিশেষজ্ঞের নিকট জিনিসটি সম্পর্কে বিস্তারিত খুঁজে পাবেন না। ইউফোলজি বাস্তব কোন বিজ্ঞান নয়। এটাকে কল্প বিজ্ঞান বলে ধরা হয়। এমন পরিস্থিতিতে আপনি কি মনে করেন এলিয়েনরা পৃথিবীতে এসেছিল? তারা মাঝে মাঝে ইউএফও নিয়ে পৃথিবীতে নেমে আসে?
জবাবে ওয়েন্ডেট বলেন, আমি মনে করি বৈষম্যগুলি এত বেশি যে আমাদের এটি তদন্ত করা উচিত। ইউএফও সত্যিই আছে কিনা, এলিয়েনরা মাঝে মাঝে পৃথিবীতে নেমে আসে কিনা সেটা নিয়ে তদন্তের সময় এসেছে। আমাদের বিষযগুলো কল্প বিজ্ঞানে সীমাবদ্ধ না রেখে সত্যিকারের তদন্ত হওয়া দরকার।
এই বিষয়ে বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের নীরবতায় হতাশা প্রকাশ করেন ওয়েন্ডেট।
যদিও মার্কিন নৌবাহিনী বলছে, আমরা ইউএফও’র ফুটেজ পেয়েছি, তবুও বিজ্ঞানীরা এখনো তাদের নিয়ে গবেষণা করতে যাচ্ছেন না। তাই ওয়েন্ডেট সন্দেহ বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়কে কেউ পেছন থেকে এই ঘটনাটিতে জড়িত হতে বাঁধা দিচ্ছে। আবার এমনও হতে পারে এধরণের গবেষণার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, সেই সংস্থান হচ্ছে না সে কারণে গবেষণা শুরু করা যাচ্ছে না।
ওয়েন্ডেট তার যুক্তির পক্ষে দৃঢ় প্রত্যয়ী, তিনি বিশ্বাস করেন এলিয়েন আছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ভিনগ্রহের জীবনের নিশ্চিতকরণের অর্থ হবে অনেকটা ভূমিকম্পের প্রভাবের মতো। তিনি মনে করেন, এলিয়েনের অস্তিত্ব যদি সত্যি হয় তবে সেটা হবে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।