লবঙ্গ চায়ের গুণাগুণ

চা প্রায় আমরা কমবেশি সবাই পান করি। নিয়মিত চা পানের রয়েছে অনেক উপকারিতা। তবে এই চায়ের সঙ্গে আরো কিছু উপাদান যোগ করে এর উপকারিতা বহুগুণে বাড়িয়ে তোলা সম্ভব। তেমনি একটি উপাদান হচ্ছে লবঙ্গ, যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন কে, ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম।


তবে শুরুতেই জেনে নেওয়া যাক লবঙ্গ-চা বানানোর প্রক্রিয়া: প্রথমে পরিমাণ মতো লবঙ্গ বেটে গুঁড়া করে নিন। তারপর সেই লবঙ্গের গুঁড়া এক কাপ পানিতে মিশিয়ে কম করে পাঁচ থেকে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। যখন দেখবেন পানি ফুটতে শুরু করেছে, তখন আধা চামচ চা পাতা দিয়ে দিন। এরপর কিছু সময় অপেক্ষা করে পানি ছেঁকে নিলেই ব্যাস, লবঙ্গ-চা তৈরী হয়ে গেল।

গবেষকদের মতে, আপনার বয়স যদি ২৫ থেকে ৪০ এর মধ্যে হয়ে থাকে, তাহলে নিয়মিত লবঙ্গ-চা খেলে বিভিন্ন রোগ থেকে সহজেই মুক্তি মিলবে। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক লবঙ্গ চায়ের উপকারিতা:

দাঁতের ব্যাথা নিমেষে কমে যাবে : লবঙ্গতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন কিছু বিক্রিয়া করে যে নিমেষে দাঁতের যন্ত্রণা কমে যায়।

শরীরে রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গ-চা পান করা মাত্র শরীরের ভেতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে দেহে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর কর্মক্ষমতা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে শরীরের সচলতাও বৃদ্ধি পায়।

আর্থ্রাইটিসের যন্ত্রণা কমে: লবঙ্গে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ এই ধরনের হাড়ের রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে এক কাপ লবঙ্গ-চা বানিয়ে কয়েক ঘন্টা ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। তারপর সেই ঠান্ডা চা ব্যথা জায়গায় কম করে ২০ মিনিট লাগালে দেখবেন যন্ত্রণা একেবারে কমে গেছে। প্রসঙ্গত, জয়েন্ট পেন কমানোর পাশাপাশি পেশির ব্যথা এবং ফোলা ভাব কমাতেও এই ঘরোয়া ওষধিটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে: ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন এই চা পানের বিকল্প নেই। এই প্রাকৃতিক উপাদানে রয়েছে নিগেরিয়াসিন, যা শরীরে প্রবেশ করার পর ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাকে এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।

জ্বরের চিকিৎসায়:এতে থাকা ভিটামিন কে এবং ই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে। এতে শরীরে উপস্থিত ভাইরাসেরা সব ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে ভাইরাল জ্বর-ফ্লুর প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার হওয়ার পর সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।

সাইনাসের সমস্যা সমাধানে: লবঙ্গে থাকা ইগুয়েনাল নামে একটি উপাদান সাইনাসের কষ্ট কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই কারণেই তো আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা এখনও এই ধরনের রোগের চিকিৎসায় লবঙ্গের ওপরই ভরসা করে থাকেন।

বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষায়: ত্বকের অ্যালার্জি, র‌্যাশ, ফুসকুড়ি বা চুলকানি ইত্যাদি সমস্যা হলে ক্ষতস্থানে লবঙ্গ চা লাগাতে ভুলবেন না। লবঙ্গে উপস্থিত ভোলাটাইল অয়েল শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। সেইসঙ্গে জীবাণুদেরও মেরে ফেলে।

হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: দুপুরের খাবারের আগে বা রাতের খাবারের আধা ঘণ্টা আগে এই চা পান করেলে হজমের সমস্যার সমাধান ঘটবে। এই চা পান করলে পেটের দিকে রক্ত প্রবাহেরও উন্নতি ঘটে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *