কুড়িগ্রামে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে।ব্রহ্মপুত্রের পানি ধীর গতিতে কমতে থাকলেও আবারো বেড়েছে ধরলার পানি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকেল ৩ টায় ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২/৩ দিন পানি হ্রাস অব্যাহত থাকবে।
এদিকে গত ১১ দিন ধরে এই দুই নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের লক্ষাধিক বানভাসি মানুষের। কোন কোন পরিবারের ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও বেশিরভাগ পরিবারের ঘর-বাড়ি থেকে এখনও বন্যার পানি নেমে যায়নি। এ অবস্থায় হাতে কাজ ও ঘরে খাবার না থাকায় খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারন করেছে। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে বন্যা কবলিত হতদরিদ্র পরিবারগুলোর।
বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে শিশু ও গবাদি পশুর খাদ্য সংকট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বানভাসি মানুষজন।
চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ আবু হানাফি জানান, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে পানি কমে গেলেও মানুষজনের জীবন যাপন স্বাভাবিক না হওয়ায় নানা দূর্ভোগে আছেন। ত্রান সহায়তা হাতে পেলে বর্ন্যাত মানুষগুলির হাতে পৌঁছে দেবো।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: বেলাল হোসেন জানান, আমার ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবার বন্যা কবলিত। এখনও এই পরিবারগুলোর ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে যায়নি। করোনা আর বন্যায় এই পরিবারগুলো খাদ্য সংকটে পড়েছে। আমি সরকারিভাবে মাত্র ৩০০ প্যাকেট খাদ্য সহায়তা পেয়েছি যা মাত্র ৩০০ পরিবারকে দেয়া সম্ভব হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে বন্যা দুর্গত এলাকায় শিশু ও গবাদি পশুর খাদ্য বিতরণ করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা: মো: হাবিবুর রহমান জানান, জেলার বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দিতে ২৭টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। পাশাপাশি পানি বাড়া-কমার সাথে সাথে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের বেশ কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। ভাঙ্গনের শিকার পরিবারগুলোর বাসস্থানের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকটও।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম জানান, বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে ৩০২ মেট্রিক টন চাল ও ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে ২০০ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এগুলোও বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে বন্যা কবলিত এলাকার শিশু ও গবাদি পশুর খাবারের বরাদ্দ পাওয়া যাবে। পাওয়া মাত্রই তা বিতরণ করা হবে।