গুরুদাসপুরে গুলি ছুঁড়ে ত্রাস সৃষ্টি- অস্ত্র উদ্ধারে তৎপরতা নেই পুলিশের

ছবি: মর্নিং নিউজ বিডি

নাটোরের গুরুদাসপুরে গুলি ছুড়ে ত্রাস সৃষ্টির ঘটনায় মামলা হলেও ঘটনার এক সপ্তাহেও অস্ত্র উদ্ধারে তৎপরতা নেই পুলিশের। গ্রেপ্তার হয়নি মামলার মূল আসামিরা। উপরন্তু ঘটনার নায়ক উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে মামলার এজাহার থেকে চেয়ারম্যানকে বাদ দেওয়া, মামলার মূল আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়া এবং অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ার ঘটনায় আতংকিত হয়ে পড়েছেন মামলার বাদীর ছেলে বীজ ব্যবসায়ী ও ইউনিয়ন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি বজলুর রশিদ।

এঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, তাঁর ব্যক্তিগত তহবিলের ইদ-সামগ্রী বিতরণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছিলেন চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন। এ ক্ষুব্ধতা থেকেই তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছেন চেয়ারম্যানের সমর্থকেরা। ওই ঘটনার নেতৃত্বে ছিলেন চেয়ারম্যান মতিন। তার ছেলেসহ অন্য সমর্থকেরা ৬-৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকায় ভীতি ছড়িয়েছিলেন।

এ ঘটনায় ধারাবারিষা ইউনিয়নের ঝাউপাড়া গ্রামের বীজ ব্যবসায়ী ও ইউনিয়ন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি বজলুর রশিদের বাবা ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ওই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের ছেলে সোহান (২৫ )-কে প্রধান আসামি করে ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ চেয়ারম্যানের মতিনের সমর্থক মতিন (৩৫), সেলিম (৩৫) ও মাহবুব (২৫)-কে গ্রেপ্তার করলেও অন্য আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। আবার ওই ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারেও তৎপরতা নেই পুলিশের।

এদিকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে আটক থাকা চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনকে মঙ্গলবার রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ডিবি পুলিশের ওসি মোহাম্মদ আনারুল ইসলাম সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মামলার স্বার্থে প্রয়োজনমতো তাঁকে আবারও ডাকা হতে পারে।
এদিকে চেয়ারম্যানকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়া ও মামলার এজাহার থেকে তার নাম বাদ দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ মামলার বাদীর ছেলে বীজ ব্যবসায়ী ও ইউনিয়ন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি বজলুর রশিদ। মামলার বাদী ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যানের সমর্থকেরা মামলার বাদীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের সময় ৬-৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লেও পুলিশ মামলা নিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে।
চেয়ারম্যানকে আসামি না করা এবং মামলার অন্য আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অন্যদিকে, মামলার বাদীর এক সমর্থক ইউপি সদস্য আবু সাইদকে চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের পক্ষে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে আবু সাইদ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাহারুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যানকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি ডিবি পুলিশের। এজাহারে নাম যুক্ত না করায় বাদ পড়েছেন তিনি। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। একইসাথে গুলি ছোড়ার কারণ অনুসন্ধান এবং অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *