ঝিনাইদহ সদর থানা থেকে ছয় মাস পর মুক্তি পেল ১১টি গরু

 

ঝিনাইদহে ছয় মাস থানা হেফাজতে রাখা হয়েছিল বিশাল আকৃতির ১১টি ভারতীয় গরু। মঙ্গলবার(২জানুয়ারি) ঝিনাইদহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আদালত চত্বরে সেগুলো নিলামে বিক্রি করা হয়। এসব গরুর খাবার বাবদ এ পর্যন্ত ১৩লাখ ২৮হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সর্বোচ্চ ডাকে গরুগুলো কিনে নেন শৈলকুপা উপজেলার কাচেরকোল গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন ও মির্জাপুরের শওকত হোসেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবু সায়েম জানান, ২০২৩সালের ২১জুন গভীর রাতে জেলার মহেশপুর উপজেলার নাটীমা সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করার সময় ভারতীয় ওই গরুগুলো আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। সেসময় মহেশপুর উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের চোরাকারবারি ফারুক হোসেন-সাদিসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছিল।

তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে মহেশপুর থানায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক পারভেজ কবির বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে তিন চোরাকারবারিকে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু গরু নিয়ে বিপাকে পড়ে পুলিশ। আদালতের কাছে নিলামের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এদিকে গরুর মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা করেন দুই ব্যক্তি। মামলা মাসের পর মাস চলতে থাকে। পরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনোজ কুমারকে গরুগুলোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। সদর থানা চত্বরেই একটি অস্থায়ী শেড নির্মাণ করেন তিনি। দুজন রাখাল রেখে গরুগুলোর দেখাশোনা করা হয়। ঝিনাইদহ চিফ জুডিশিয়াল আদালতে মালিক দাবি করে দায়ের করা মামলায় হেরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন ওই ব্যক্তিরা। সঠিক কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়ে জজ আদালতেও হেরে যান তারা। চলে যান উচ্চ আদালতে। এরপরেই হঠাৎ মামলা তুলে নেন ওই দুই ব্যক্তি।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আবু সায়েম জানান, গরুগুলোর খাবার বাবদ এ পর্যন্ত ১৩লাখ ২৮হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে প্রাণিসম্পদ বিভাগ ১২লাখ ৯৮হাজার টাকা খরচ করেছে। বাকি ৩০হাজার টাকা খরচ হয়েছে তাঁর।

এ ব্যাপারে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির জিয়াউর রহমান জানান, নিয়ম মেনে আদালত চত্বরে প্রকাশ্য নিলামে ১১টি গরু বিক্রি করা হয়। প্রকৃত মূল্য ১৯লাখ ৫হাজার টাকা। সরকারি মূল্য ধরা হয়েছিল প্রতিটির জন্য এক লাখ ৮০হাজার টাকা। ভ্যাট ও আইটিসহ ২১লাখ ৪৩হাজার ১২৫টাকা। গরু পালন করতে যে টাকা খরচ হয়েছে, তা যাচাই-বাছাই করা হবে। এর পর খরচ বাদ দিয়ে বাকি টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *