রংপুরে কোনো ধরনের সহিংতা না করার নির্দেশনা দিলেন-শেখ হাসিনা

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের সহিংতা না করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার(২৬ডিসেম্বর) রংপুরের মিঠাপুকুরে দুপুরে নির্বাচনী জনসভায় এ কথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। দেশের মানুষকে উন্নত জীবন দিতেই কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। মানুষের ঘরে ঘরে আজ বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। আবারও ক্ষমতায় এলে দারিদ্র্য দূর করাসহ খাদ্য নিরাপত্তা দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, বার বার নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার কারণে উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলায় উন্নয়ন হয়েছে। আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে; দেশের মানুষের উন্নতি হয়েছে। ১৯৯৬সাল থেকে ২০০১সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলাম। তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হয়েছিল, খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন করা হয়, আবার সাক্ষরতার হারও বাড়ানো হয়েছিল। ২০০১সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি, যারা এসেছিল তারা আবার এদেশের মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজকের বাংলাদেশ, প্রযুক্তির বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিন। সবাইকে মনে রাখতে হবে কোনো সংঘর্ষে জড়ানো যাবে না। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের সহিংতা না করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনাও দেন ।
এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নির্বাচন বয়কট করেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি, বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। সবাইকে সাবধান থাকতে হবে।
এর আগে তারাগঞ্জে নির্বাচনী জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রতিটি জেলার উন্নয়ন করাই সরকারের লক্ষ্য। মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতা আছি বলেই দেশ থেকে মঙ্গা দূর হয়েছে। নৌকা মার্কাই মানুষের জীবন মান উন্নত করেছে। নৌকা মার্কা প্রতীকে ভোট দিয়ে আরেকবার আপনাদের সেবা করার সুযোগ করে দিন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে কেউ ভূমিহীন, কেউ গৃহহীন থাকবে না। আওয়াম লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়। বিনামূলে বই ও প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত উপবৃত্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
তিনি আরও বলেন, রংপুর থেকে শুরু করে লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের প্রতিটি এলাকাই ছিল দুর্ভিক্ষপ্রবণ এলাকা। মঙ্গা লেগেই থাকত। আজকে সেই মঙ্গা নেই, আজকে সেই দুর্ভিক্ষ নেই। ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতা আছি বলেই, দেশ থেকে মঙ্গা দূর হয়েছে। দেশের প্রতিটি জেলার উন্নয়ন করাই সরকারের লক্ষ্য। ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতা আছি বলেই দেশ থেকে মঙ্গা দূর হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৯৬সালে যখন প্রথম ক্ষমতা গ্রহণ করা হয়, তখন বিনা জামানতে বির্গাচাষীদের কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। মাত্র ১০টাকায় কৃষক যাতে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারেন সেই ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। কৃষকদের কার্ড করে দেয়া হয়েছে। ভর্তুকি দিয়ে সার-বীজ ক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষির জন্য বিদ্যুতের ভর্তুকি দেয়া হয়েছে। কৃষি উন্নয়নে সবক্ষেত্রে ভতুকি দেয়া হচ্ছে। এখন আর কাঠের লাঙল নয়, মেশিনে ধান লাগানো ও কাটাও হচ্ছে। সেটার ব্যবস্থাও আওয়ামী লীগ সরকার করে দিয়েছে। ৫০থেকে ৭০ভাগ ভর্তুকি দিয়ে কৃষি উপকরণ কেনার ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে, কারণ দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা হয়। নৌকা মার্কাই মানুষের জীবন মান উন্নত করেছে। নৌকা মার্কা প্রতীকে ভোট দিয়ে আরেকবার আপনাদের সেবা করার সুযোগ করে দিন।
নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে রংপুর পৌঁছেছেন সকালে। গণভবন থেকে সকাল সোয়া ১০টার দিকে রওনা দেন তিনি। বিমানযোগে সৈয়দপুর পৌঁছান তিনি। এ সফরে তার সঙ্গে রয়েছেন ছোট বোন শেখ রেহানাসহ আরও অনেকে।
এ সফরে তিনি পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিকেল ৩টায় নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিয়েছেন। আগামী ৭জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট চাইতেই প্রধানমন্ত্রীর এ সফর।
এছাড়াও শেখ হাসিনা নিজ বাসভবন লালদীঘি ফতেহপুরে পরিবারের সদস্যদের সাথে মিলিত হয়ে তার স্বামীর (ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া) কবর জিয়ারতসহ নিকট আত্মীয়দের সাথে কুশল বিনিময় করেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *