বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে স্বাভাবিক দিনের মতোই চলছে সবই।
সকাল থেকেই মহানগরীর পিকচার প্যালেস মোড়, ডাক বাংলার মোড়, শান্তিধাম মোড়ে সাধারণ মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। অনেক জায়গায় খুলেছে দোকানও। প্রশাসনেরও তেমন নজরদারি নেই। অনেক স্থানে পুলিশ থাকলেও কোন কঠোরতা নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শহরের মানুষ অপ্রয়োজনে অনেকে বিনা বাধায় বের হচ্ছেন। বিধি নিষেধ আছে কিনা বোঝাই যাচ্ছে না। খুলনার বিভিন্ন স্থানে মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এই জনসমাগমের কারণে করোনা ঝুঁকি আরো বাড়তে পারে।
বিধি নিষেধে রয়েছে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে থ্রি হুইলার যেমন- মাহেন্দ্র, ব্যাটারি চালিত অটো ইত্যাদিতে দুইজন যাত্রীর বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। কিন্তু ইজিবাইক ও মাহেন্দ্রে ৫-৬ জন করে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। রাস্তায় যারা চলছেন তাদের অনেকেরই মুখে মাস্ক পরা নেই।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, বিধি নিষেধ যারা মানছেন না তাদের প্রতি প্রশাসনের কঠোর হওয়া প্রয়োজন। খুলনার মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে দিন দিন করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এখনও যদি নিয়ম না মানে তাহলে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে এটা সবার বোঝা উচিত। আসুন আমরা সবাই নিজে বাঁচি, অন্যকে বাঁচাই, দেশকে বাঁচাই।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে খুলনা জেলার সকল উপজেলা ও মহানগরীতে দোকানপাট, শপিংমল, যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলের উপর খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল হোসেন ১১ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে ২৫ জুন (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ১৫ দিনের জন্য দোকানপাট, যানবাহন ও চলাচলের ওপর বিধি নিষেধ জারি করেছেন।
বিধি নিষেধ অনুযায়ী নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, কাঁচাবাজার, মৌসুমী ফলের দোকান ও ফার্মেসি ব্যতীত অন্যান্য দোকানপাট, শপিংমল ও ফুটপাতের দোকান বন্ধ থাকবে।
শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক ব্যবহার করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও কাঁচাবাজার প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে কেসিসি সান্ধ্যবাজার ও সোনাডাঙ্গা ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন পাইকারি কাঁচাবাজারের ক্ষেত্রে খুলনা জেলা প্রশাসনের পূর্বের আদেশ বহাল থাকবে। এছাড়া ফার্মেসিও সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে।
আরও পড়ুন: দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত ৩১৮৭, মৃত্যু ৩৭
মোটরসাইকেলে আরোহী ব্যতীত অন্য কেউ উঠতে পারবেন না। তবে পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে এটি শিথিলযোগ্য থাকবে।
সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে থ্রি হুইলার যেমন- মাহেন্দ্র, ব্যাটারি চালিত অটো ইত্যাদিতে দুইজন যাত্রীর বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। এছাড়া সকল বাস বাসস্ট্যান্ড থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ও আসার ক্ষেত্রে যাতায়াত পথে বাসস্ট্যান্ড ব্যবহার করত হবে। যেখানে-সেখানে বাস থামানো যাবে না।
জনসাধারণ অতি জরুরি প্রয়োজন যেমন ওষুধ ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন-সৎকার ব্যতীত সন্ধ্যা ছয়টা হতে পরবর্তী দিন সকাল সাতটা পর্যন্ত কোনভাবেই ঘরের বাইরে অবস্থান করতে পারবে না।
ঘরের বাইরে অবস্থানের ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান, শারীরিক দূরত্ব প্রতিপালনসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।
জরুরি পরিষেবা যেমন ব্যাংক-বীমা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবা এবং কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, জ্বালানী, সংবাদপত্র, খাদ্য, শিল্পপণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, জরুরি ও নিত্য প্রয়োজনীয় পরিবহনের যানবাহন এই আদেশের আওতাভুক্ত থাকবে।