টাঙ্গাইলে গ্রাম্য সালিশে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ২

নিহত লতিফ

টাঙ্গাইলের বাসাইলে গ্রাম্য সালিশে আব্দুল লতিফ খান (৬৫) নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শনিবার (৩ে১ অক্টোবর) বিকালে নিহতের ছেলে হাবিব বাদি হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৮ থেকে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। পরে এ ঘটনায় এজাহারভূক্ত ২ আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- উজ্জল (৪০) এবং লিটন (৩৮)। এদিকে শনিবার বাদ আছর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ খানের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় নিজ গ্রাম মটরায় দাফন করা হয়।

বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে। আশা করছি বাকি আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। এদিকে গ্রেফতারকৃত দুই আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেলাহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ আসামীদেরকে আদালতে উপস্থিত করে ৫ দিনের রিমান্ড চায়। পরে আদালত রোববার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছে।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ খানের সঙ্গে প্রতিবেশী আবু খানের দুটি পুকুরের মাছ নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা লতিফ খান ও আবু খানের পরিবারের মধ্যে বাকবিতক-ার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহজাহান খানের বাড়িতে শুক্রবার বিকালে সালিশ বসে। এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটির জেরে আবু খান ও তার ছেলে পাভেল এবং পারভেজসহ কয়েকজনে মিলে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ খানকে কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে আহত করে। এ সময় তার পরিবার ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে হাবলা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য শাহজাহান খান বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষকে নিয়ে সালিশ বসা হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষই ক্ষিপ্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় দুই পক্ষেরই কয়েক জন আহত হয়। ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সফিকুল ইসলাম সজিব বলেন, দুপুরে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তার শরীরের বাইরের অংশে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তার মৃত্যুর কারণ চিহ্নিত করার জন্য আরো কিছু স্বাস্থ্যের পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকা পাঠানো হবে। হিস্টোপ্যাথি রির্পোট হাতে পেলে জানা যাবে তার কিভাবে মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় এবং পরিবারের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতের পরিবার এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি করেছেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *