নাটোরে টেন্ডার না পাওয়ায় হাসপাতাল-কর্মচারীকে ঠিকাদারের মারধর

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ঔষধ সরবরাহের জন্য ৭০ লাখ টাকার টেন্ডার না পেয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী শহিদুল ইসলামকে মারধর করেছেন এইচটি ড্রাগের কর্ণধার ঠিকাদার এমদাদুল হক হীরা।

মঙ্গলবার (২ জুন) দুপুরে নাটোর সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের এই ঘটনা ঘটে। এসময় সিভিল সার্জন ডা: কাজী মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিভিল সার্জন অফিসের একাধিক কর্মচারী জানান, ঠিকাদার হীরা সরকারি কর্মকর্তাদের মতো সারাক্ষণ অফিসে এসে বসে থাকেন। পুরো সিভিল সার্জন অফিসকে তিনি জিম্মি করে রেখেছেন। কেউ কিছু বললে ক্ষিপ্ত হয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করেন। হীরার ‘জিম্মি’ থেকে সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মুক্তি চায় বলেও জানান তারা।

সূত্র জানায়, জেলা সিভিল সার্জনের অধীনে নাটোর সদর হাসপাতালসহ ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে একচেটিয়াভাবে ওষধ সরবরাহ করে আসছিল ঠিকাদার এমদাদুল হক হীরা। সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের অধীনে ঔষধ ক্রয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে উপজেলা পর্যায় থেকেই টেন্ডার আহবান করা হচ্ছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঔষধ সরবরাহের জন্য ৭০ লাখ টাকার একটি টেন্ডার আহবান করা হয়। এই টেন্ডারে ঠিকাদার ইমদাদুল হক হীরাসহ মোট ৬ জন ঠিকাদার অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু টেন্ডারে ঔষধ সরবরাহের কাজটি পায় পাবনার মের্সাস আহনাফ এন্টারপ্রাইজ ও আরজেডএস এন্টারপ্রাইজ।

এরপরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ঠিকাদার হীরা। এর মধ্যে দুপুরে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে হাসপাতালের প্রধান সহকারী শহিদুল ইসলাম দাপ্তরিক কাজে এলে সেখানেই তাকে মারধর করেন ঠিকাদার হীরা। এ সময় শহিদুল ইসলামের মোবাইল ফোন এবং চাবি কেড়ে নেন হীরা। পরে সিভিল সার্জনের মধ্যস্ততায় মোবাইল ফোন এবং চাবি ফিরিয়ে দেন।

এ বিষয়ে ঠিকাদার ইমদাদুল হক হীরার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, অফিসিয়াল কাজে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে এসেছিলাম। সেখানেই হাসপাতালের টেন্ডারের বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ঠিকাদার হীরা আমাকে চড় থাপ্পর মারেন। পরে অফিসের অন্যরা এসে আমাকে উদ্ধার করে। আমি বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের সিদ্ধান্তে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নাটোর জেলা সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রতন কুমার সাহাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর আগের সিভিল সার্জন থাকাকালীন কিছু সমস্যা ছিল। বর্তমানে ঠিকাদার হীরা সিএস অফিসে কম আসেন বলে জানান তিনি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *