নান্দনিক নির্মাণশৈলী আর স্থাপত্যে অনন্য মিঠাপুকুর বড় মসজিদ

মিঠাপুকুর বড় মসজিদ বা তিন কাতার মসজিদ রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার অন্তর্গত প্রাচীন মসজিদ গুলোর একটি। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। ধারণা করা হয় মোঘল আমলের শেষের দিকে এটি তৈরি। নান্দনিক কারুকার্যের ছোঁয়া সব জায়গায় মসজিদটিতে। তিনটি গম্বুজ মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে থাকা মিঠাপুকুর বড় মসজিদটি বয়সে ঐহিত্যে বেশ পুরনো। রঙ্গ নির্মাণশৈলির আকর্ষণে আকৃষ্ট না হয়ে উপায় নেই দর্শনার্থীদের।

রংপুর থেকে মিঠাপুকুর সদরে যাবার আগে পশ্চিমে একটি রাস্তা চলে গেছে দিনাজপুর ফুলবাড়ির দিকে। সে রাস্তার কিছুটা পেরুলে হাতের বামে দক্ষিণে একটু দূরে সুন্দর লাল ইট রঙের একটা পুরনো মসজিদ চোখে পড়বে। এটি’ই মিঠাপুকুর মসজিদ নামে পরিচিত। আবার অনেকেই একে মিঠাপুকুর বড় মসজিদ আবার অনেকেই মিঠাপুকুর তিন কাতার মসজিদ বলে।

ইতিহাস সূত্রে জানা গেছে, ১২২৬হিজরি বা ১৮০২খ্রিস্টাব্দে জনৈক শেখ মোহাম্মদ সাবেরের পুত্র শেখ মোহাম্মদ আছের এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের সামনে লাগানো তথ্য প্রাচীরে সুস্পষ্ট করে লেখা আছে ১৮০২খ্রিস্টাব্দের কথা কিন্তু উইকিপিডিয়া সহ বেশ কিছু স্থানে এর নির্মাণ সময় ১৮১০খ্রিস্টাব্দ বলা হয়েছে। আয়তকার তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি। মসজিদের চার কোণে চারটি স্তম্ভ যা ছাদের কর্ণার থেকে বেশ উপরে উঠে তদানীন্তন মুসলিম সভ্যতার নির্মাণ শৈলী পরিস্ফুটন হিসেবে। এটি ছোট গম্বুজের মতো কিউপোলা আকারে শেষ হয়েছে। আয়তকার মসজিদটি দুটি ল্যাটারাল খিলানের সাহায্যে তিন ভাগে ভাগ করে ওপরে নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি গোলাকার গম্বুজ। মসজিদের পূর্ব দিক দিয়ে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে মোট পাঁচটি প্রবেশ পথ থাকলেও এখন পূর্ব দিকের মাঝের পথটি ব্যবহার করা হয়।

তিন গম্বুজ বিশিষ্ট আয়তকার এই মসজিদটি আকার ১০দশমিক ৬৬মিটার ৪দশমিক ১১মিটার। মসজিদের তিন মিহরাব, সামনের দেয়াল, প্যারাপেট দেয়াল ও গম্বুজের গোলাকার অংশে দৃষ্টিনন্দন নকশা দিয়ে আবৃত করা হয়েছে। কিছু প্যানেল করা আছে। নকশায় লতাপাতা, ফুল ও জ্যামিতিক আবহ ফুটে উঠেছে। খুব আকর্ষণীয় এর মূল প্রবেশ দরজা। বাংলাদেশের নিজস্ব স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে দোচালা আকৃতির এই দরজা মসজিদে পূর্ব দিকের দেয়ালের মাঝে নির্মিত। বর্তমানে নিরাপত্তার কারণে দৃষ্টি নন্দন লোহার গ্রিলের দরজা সেখানে লাগানো আছে। মূল দরজা দিয়ে ঢুকে সুন্দর একটি উঠোন বা বারান্দা।ফ্যাকাসে লালচে ইট রঙের মসজিদটি চারদিকে সবুজ ক্ষেত-ফসলের মাঝে অপূর্ব লাগে।

 

মর্নিংনিউজ/বিআই/এসইউ

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *