প্রেমের টানে ভারতীয় এক সন্তানের জননী এখন বাংলাদেশে

প্রেম মানে না কোনো বাঁধা, মানে না কোন জাতি, গোষ্ঠী, ধর্ম ও বর্ণ,  না মানে কোনো বয়স, মানে না কোনো নিয়ম। সমাজকে চোখ রাঙিয়ে ভালোবাসা জয় করে নেয় সবকিছু।তাই প্রেমের টানে ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে ভারতীয় এক সন্তানের জননী এখন বাংলাদেশে তার প্রেমিকের বাড়ীতে অবস্থান করছে। ঐ নারীর সাথে তিন বছরের এক ছেলে সন্তানও এসেছে। ভারতীয় ওই নারীর নাম শ্রীমতি সুনিয়া সাঁউ (২৯)। তিনি ভারতের  ব্লাশপুর ছত্রিশগড় রাজ্যের মঙ্গলী জেলার জেড়াগাঁও থানার মৃত ফাগুরাম সাঁউ ও রাজকুমারী দম্পতির মেয়ে। একই রাজ্যের ধনউড়া এলাকার রহিত শর্মার স্ত্রী। ভারতীয় ওই নারীকে উদ্ধারের জন্য বিজিবির টহল টিম কাজ করছে। তিনি বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারেন না। ২৫ জুলাই দুই দেশের দালালের মাধ্যমে ভুরুঙ্গামারী সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের প্রেমিকের বাড়ীতে আসেন ওই নারী।

শুক্রবার (২৮ আগস্ট) দুপুর ১২ টায় সরেজমিনে জানা যায়, স্থানীয়দের চোখকে ফাঁকি দিয়ে গত এক মাস ধরে প্রেমিক ওবাইদুল হক (৩৫) এর বাড়ীতে ঘর-সংসার করছেন ওই ভারতীয় নারী। প্রেমিক ওবাইদুল হকের বাড়ী কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সীমান্তঘেষা কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর চানদোলার পাড় গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আবুল কাসেমের ছেলে।

ভারতীয় নারী হিন্দি ভাষায় জানান, প্রেম করে চার বছর পূর্বে ভারতের দিল্লীতে তাদের বিয়ে হয়। আমি জন্মভুমি ও পরিবারের মায়া ত্যাগ করে বাংলাদেশে স্বামীর বাড়ীতে এসেছি। আমার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তাই আমি এখানেই ঘর-সংসার করে থাকতে চাই।

স্থানীয় আফজাল হোসেন (৬৫), মতিয়ার রহমান (৬৫), আব্দুল সাত্তার (৫৫) ও সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রথম স্ত্রী কল্পনা বেগম স্বামীর দ্বিতীয় বিয়েকে মেনে নিয়ে ঘর-সংসার করে আসছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে প্রথম স্ত্রী কল্পনা বেগমের সাথে স্বামী ওবাইদুল হকের সঙ্গে ঝগড়াঝাটি হওয়ার সুবাধে ভারতীয় নারীকে বিয়ের বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

তারা আরও জানান, ওবাইদুল হক ভারতে গিয়ে রাজমিস্ত্রীর কাজ করার সুবাধে ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে চার বছর আগেই ভারতের দিল্লী শহরে তাকে বিয়ে করে। তাদের ঘরে একটি তিন বছরের ছেলে সন্তানও রয়েছে। সেই সন্তানসহ ওই নারী এক মাস আগে সীমান্ত পেরিয়ে স্বামী ওবাইদুল হকের বাড়ীতে চলে আসেন।

ওবাইদুল হক প্রেম করে ভারতীয় নারীকে বিয়ের কথা স্বীকার করে জানান, আমি বৈধভাবে ভারতে তাকে বিয়ে করেছি। সে বর্তমানে আমার সাথে বাড়ীতে অবস্থান করছে।

আরও পড়ুন: খুলনায় ঠিকাদারি কাজের দ্বন্দে বলি এক স্কুলছাত্রী গুলিবিদ্ধ

লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের কাশিপুর কোম্পানি কমান্ডার মিরাজ জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। সেখানে বিজিবির টহলটিম অবস্থান করছে।

কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মন্ডল জানান, তিনি ভারতীয় নাগরিক। বিনা পাসপোর্টে বাংলাদেশে এসেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজীব কুমার রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিজিবি সদস্যরা সহযোগিতা চাইলে দেওয়া হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *