ঝিনাইদহের শৈলকূপায় আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য রিপন হত্যার বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন নিয়ে জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। তবে নিহতের স্ত্রী দাবী জানিয়েছেন হত্যার প্রকৃত আসামীরা যেন শাস্তি থেকে বাদ না পড়ে। মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিহতের স্ত্রী তানিয়া খাতুনের নাম থাকলেও ব্যানারে আয়োজক হিসেবে শৈলকূপা উপজেলা আওয়ামী লীগের নাম লেখা রয়েছে। এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারন সম্পাদকসহ অসংখ্য নেতাকর্মীরা। তাদের উপিস্থিতি জানান দেয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এই আয়োজন করা হয়েছে বলে মনে করছেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতারা। তাঁরা দাবি করছেন রিপন হত্যাকান্ডের ঘটনা ভিন্নখাতে নিতেই উপজেলা আওয়ামী লীগের একটা পক্ষ একের পর এক মিথ্যাচার করে চলেছে। এতে করে প্রকৃত হত্যাকারীরা আইনের বাইরে চলে যাবে বলেও তাদের দাবী।
শৈলকূপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু জানান,এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। উপজেলায় গত এক দশকে প্রায় শতাধিক আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী হত্যাকান্ডের শিকার হলেও তাদেরকে নিয়ে কখনই আমাদের নেতাকর্মীদের এমন প্রতিবাদ সভা-সমাবেশ,সংবাদ সম্মেলন দেখি নাই। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মুলত নিজেরাই রিপনকে হত্যা করেছে।
জেলা আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক জানান,দেড় দশক ধরে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় রয়েছেন। একজন কর্মীর হত্যাকে কেন্দ্র করে একের পর এক প্রতিবাদ সভা ও সংবাদ সম্মেলন করায় মনে হচ্ছে যে এটা বিরোধী দলের কোন ঘটনা। এগুলোই জানান দেয় কারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে। একজন দলীয় নেতাকর্মী হত্যাকান্ডের বিচারের জন্য দেশে প্রচলিত বিচার ব্যবস্থা রয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধার লিয়াকত হোসেন জানান,ক্ষমতাসীন দলের জন্য এটা দুঃখজনক বিষয়। স্বামী হত্যার বিচারের দাবীতে একজন স্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করতেই পারেন। সেখানে ঘটা করে রাজনৈতিক দলের ব্যানার ও নেতাকর্মীদের উপিস্থিতি শোভনীয় নয়।
উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর রাত দেড়টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন আবাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে আইন বিষয়ক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান রিপন। পথে মীনগ্রাম মাঠের মধ্যে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা তাকে গতিরোধ করে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর যখম করে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
মর্নিংনিউজ/বিআইএস